Homeলাইফস্টাইলশ্রীলঙ্কার ৩০০ কিলোমিটার পেকো ট্রেইল

শ্রীলঙ্কার ৩০০ কিলোমিটার পেকো ট্রেইল


চা-শিল্পে নিজেদের সমৃদ্ধ ইতিহাস পর্যটকদের জানাতে শ্রীলঙ্কায় সম্প্রতি চালু হয়েছে পেকো ট্রেইল বা হাঁটার পথ। ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ট্রেইল তৈরি হয়েছে চা-বাগান, গ্রাম আর বনাঞ্চলে মধ্য দিয়ে।

শ্রীলঙ্কার পার্বত্য অঞ্চলে হাঁটতে গিয়ে লক্ষ করবেন, সেখানে আবহাওয়া খুব দ্রুত বদলে যায়। কিছুক্ষণ আগে যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে, একটু পর সেখানে হেসে ওঠে রোদ। তবে যা কখনো বদলায় না, তা হলো দেশটির চা-বাগান।

পেকো ট্রেইল শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত। এটি ক্যান্ডি শহর থেকে শুরু হয়ে নিউয়ারা এলিয়া শহরে শেষ হয়। পুরো পথটি ২২টি ধাপে বিভক্ত এবং এর মধ্য দিয়ে হাঁটার সময় পর্যটকেরা স্থানীয় সম্প্রদায় এবং শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলো দেখতে পাবেন।

পেকো ট্রেইল পরিচালনা করছে পেকো ট্রেইল কোম্পানি গ্যারান্টি লিমিটেড। এটি একটি অলাভজনক সংস্থা। তারা স্থানীয় সম্প্রদায় এবং দায়িত্বরত পার্টনারদের নিয়ে একসঙ্গে পরিবেশ ও সংস্কৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করে।

এই ট্রেইল মূলত চা-পাতা পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হতো। মিগুয়েল কুনাট প্রায় ১০ বছর ধরে গবেষণা করে এই ট্রেইল তৈরি করেছেন। তাঁকেই এর প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। মিগুয়েল কুনাট আরও বলেন, ‘আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল, শ্রীলঙ্কাকে একটি বিশ্বমানের হাইকিং গন্তব্য হিসেবে সবার সামনে তুলে ধরা।’

২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউএসএআইডির তহবিলে ট্রেইলটি চালু করা হয়। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য নয়; বরং এই ট্রেইলের উদ্দেশ্য হলো, স্থানীয় মানুষের জীবনধারা, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে পর্যটকদের অবহিত করানো। এই পথে অনেক মন্দির এবং স্থানীয় বাজার রয়েছে। পর্যটকেরা এই ট্রেইল ধরে হাঁটলে শ্রীলঙ্কার জীবনযাত্রার এসব অনুষঙ্গের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন। শ্রীলঙ্কার চা-শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভারতীয় তামিল বংশোদ্ভূত স্থানীয় চা-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগও পাওয়া যায় এ ট্রেইলে হাঁটতে গেলে।

পেকো ট্রেইলকে বিশ্বের অন্যতম সেরা হাইকিং ট্রেইলের একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা এবং অ্যাডভেঞ্চারের অনন্য মিশ্রণ এখানে পাওয়া যায়। এই উদ্যোগ শুধু শ্রীলঙ্কার পর্যটনশিল্পকেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে না, এর সঙ্গে স্থানীয় সম্প্রদায়কেও এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করছে। স্থানীয় মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে এবং তারা এই ট্রেইলের মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতি বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে পারছেন।

শ্রীলঙ্কার সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার একটি সেরা মাধ্যম এই পেকো ট্রেইল। একই সঙ্গে এটি শ্রীলঙ্কার পর্যটনশিল্প এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য একটি টেকসই ও লাভজনক পথ হয়ে উঠছে।

সূত্র: বিবিসি





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত