ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন আজ। ১১ ফেব্রুয়ারিকে ‘প্রমিজ ডে’ বলেই জানে প্রেমিক যুগলেরা। ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে এত দিবস আসলে ভালোবাসা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই। কারণ এটি হারিয়ে যায় বলে মানুষ তাকে খুঁজতে থাকে জীবন ভর। ভালোবাসার সম্পর্ককে আরও একধাপ এগিয়ে নিতে একে অপরের সঙ্গে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আর বছরের এই দিনটি সম্পর্কের মধ্যকার ইমোশনাল সেফটিকে আরেকটু জোরদার করতে পারে। সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্য়ে প্রমিজ ডে বা প্রতিজ্ঞা দিবসে প্রিয় মানুষটিকে যা দিতে পারেন,
মানসিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা
শুনতে অবাক লাগলেও একটি সম্পর্ক সুন্দরভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য মানসিক নিরাপত্তা দেওয়া ও নেওয়ার মধ্য়ে গভীর সংযোগ রয়েছে। আজকের এই প্রমিস ডে তে প্রতিজ্ঞা করুন, আপনার সঙ্গী সব সময়ই এই সম্পর্কে নিরাপদ। এই সম্পর্কটি যেন দুজনের জন্যই হয়ে ওঠে মধুর, সে ব্যাপারে দুজনই দুজনকে কথা দিন।
পারস্পরিক সহায়তা
জীবনের সব উত্থান–পতনে একে অপরের পাশে থাকবেন, সে কথা দিন। একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকা সম্পর্ক আরও একধাপ এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে এটি। সঙ্গীর জীবনের দোলাচলে নিজেকে সব সময় উপস্থিত রাখার কথাটিও দিন এই প্রমিস ডে–তে।
পারস্পরিক সম্মান
একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। মনে রাখা জরুরি, শ্রদ্ধাবোধ ছাড়া ভালোবাসা প্রস্ফুটিত হতে পারে না। সম্পর্কে মনোমালিন্য, মতবিরোধ হতেই পারে। তাই বলে ব্যক্তি মানুষটিকে অসম্মান, তার ভাবনা ও কাজকে অসম্মান করা চলে না।
সম্পর্কে সততা
সততাকে একপাশে রেখে কোনো ভালোবাসার সম্পর্ক এগোতে পারে না। আজকের প্রমিস ডে–তে প্রতিজ্ঞা করুন, সম্পর্কের জন্য হানিকর কোনো কার্যকলাপে জড়াবেন না। সম্পর্কে অপমান করা হয় এমন যেকোনো কাজ থেকে বিরত থাকবেন। যদি কখনো সম্পর্কে নতুন কারও অনুপ্রবেশ ঘটে, তাহলেও একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তবেই নতুন সম্পর্কে জড়াবেন। তবুও কেউ কাউকে ঠকাবেন না।
মনোযোগী শ্রোতা হওয়ার প্রতিশ্রুতি
স্মার্টফোনসহ যেকোনো ডিভাইসের স্ক্রিন আসলে চোরাবালি। এগুলো কেবল টেনেই যাচ্ছে আপনার দিন, রাত, সময়, মনোযোগ— সব। চব্বিশ ঘণ্টায় ঠিক কতক্ষণ এই স্ক্রিন গিলছে আপনার সময়? প্রয়োজন, বিনোদন ও অপ্রয়োজনে কতক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন, হিসাব রেখেছেন কি?
অফিসের মেইল চেক আর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের গুরুত্বপূর্ণ নোটিফিকেশন দেখার পর কখন যে আপনি স্ক্রলিংয়ে ডুবে গেলেন নিজেই খেয়াল করেননি। নাশতার টেবিলে বসেও আপনার চোখ ছিল নীলাভ ফেসবুকে। অথচ চোখ পড়েনি সঙ্গী বা সঙ্গিনীর দিকে। হু, হা করেই তাঁর সব কথার উত্তর দিয়েছেন। এই জায়গাটা থেকে নিজেদের সরিয়ে আনার চেষ্টা করুন। নিজেরা যখন কথা বলবেন তখন কেবল নিজেদের কথাই শুনুন। নিজেদের কথারই উত্তর দিন।
নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগের প্রতিশ্রুতি
পাশাপাশি থাকা মানেই যে একসঙ্গে থাকা নয়, তা এ প্রজন্মের যুগলদের দেখলেই বোঝা যায়। পাশাপাশি বসেও দুজনের হাতে সেলফোন। দুজনই দুটো ভিন্ন পৃথিবীর বাসিন্দা তখন। কাজের বেলায় এ ব্যাপারটা মেনে নেওয়া গেলেও, এই ঘটনা যদি সব সময় ঘটতে থাকে, তাহলে সেটা সম্পর্কের জন্য রেড ফ্ল্যাগ। নিয়মিত কথা বলা ও যোগাযোগের অভাবে ভেঙে যায় হাজারো সম্পর্ক। নিজেরা কথা বলুন, একে অপরের কাজে সাহায্য করুন, একে অপরের প্রয়োজন অনুভব করুন। সম্পর্ককে চাঙা করে তোলার আরও একটি সুযোগ দিন একে অপরকে।
স্বচ্ছ সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি
সম্পর্ক তখনই ধীরে ধীরে ভাঙনের দিকে এগিয়ে যায় যখন তাতে স্বচ্ছতার অভাব থাকে। শূন্যের ওপর আর যাই হোক ভালোবাসার সম্পর্ক টেকে না। সঙ্গীকে যেমন বিশ্বাস করতে হবে তেমনি অপরাধের মানুষটিকেও হয়ে উঠতে হবে বিশ্বাসযোগ্য। একে অপরের কাছে থাকতে হবে পানির মতোই পরিষ্কার। একটি মজবুত সম্পর্কের জন্য স্বচ্ছতা খুব জরুরি একটি বিষয়।
সূত্র: হার জিন্দেগি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া