জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে ৪৩তম বিসিএসের গেজেট হতে বিভিন্ন ক্যাডারের প্রার্থীদের মধ্য থেকে ১৬৮ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বাদ পড়াদের পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট।
বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর জোটের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র মানুষের জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। সরকারি চাকরির ক্ষেত্র প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি যুবসমাজের বহুল কাঙ্ক্ষিত ‘সোনার হরিণ’ হয়েই শিক্ষার্থীদের কাছে ধরা দেয়। তাও দীর্ঘ সময় ও পরিশ্রমের পথ পাড়ি দিয়ে। সেই নিয়োগের সর্বশেষ ধাপে প্রকাশিত গেজেট হতে এরকম আচমকা এতজন প্রার্থীর নাম বাদ দেওয়ায় জনমনে বিভিন্ন আশঙ্কা ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আমরাও গভীর উদ্বিগ্ন বোধ করছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল বলেন, দীর্ঘদিনের আওয়ামী দুঃশাসন পেরিয়ে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকার বুঝে নেওয়ার এক প্রত্যয়ে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক চিন্তা ও কাঠামোকে গড়ে তোলার আহ্বানকে আমাদের সামনে এনে দিয়েছে। সবাই মিলে বৈষম্যহীন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নেই তো এত লড়াই, আত্মবলিদান এবং রক্তপাত। ফলে যে নতুন বাংলাদেশে আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি, সেখানে এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না, যা মানুষের মনে নতুন করে বৈষম্যের জন্ম দেয়। সম্প্রতি ৪৩ তম বিসিএসের গেজেটে প্রকাশিত প্রার্থীদের নামের তালিকা হতে যে ১৬৮ জনকে বাদ দেওয়া হলো, তার সুনির্দিষ্ট কারণ দেশের জনগণ জানতে চায়। আমরা একটি গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে বলতে চাই, এ ধরনের সিদ্ধান্ত কোনও ব্যক্তির ধর্মীয় পরিচয়, রাজনৈতিক বিদ্বেষ বা অন্য কোনও বৈষম্যমূলক অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নেওয়া না হয়। আমরা চাই, একজনের প্রকৃত যোগ্যতাকে যেন কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ করা না হয় এবং কারও ওপর যেন অবিচার না হয়। জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেকোনও প্রকার বৈষম্য এবং অন্যায়ের পরিপন্থী, তা যেন আমরা ভুলে না যাই।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, রাগীব নাঈম– সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, দিলীপ রায়– সভাপতি, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, ছায়েদুল হক নিশান– সভাপতি, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, মিতু সরকার– সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, অঙ্কন চাকমা– সভাপতি, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ,তাওফিকা প্রিয়া– সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত),
বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন।
উল্লেখ্য, সরকার গত ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত ৪৩তম বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) নিয়োগের গেজেট বাতিল করে নতুন গেজেট প্রকাশ করেছে। সেখানে বিভিন্ন ক্যাডার থেকে ১৬৮ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।