গণফোরাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংবিধান বাতিল করলে দেশে বিভাজন তৈরি হবে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পতিত স্বৈরাচার হাসিনা ও তার দোসররা নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করে পরিস্থিতি সংকটাপন্ন করতে পারে। ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে কোনও ব্যক্তি, দল বা গোষ্ঠীর অপকর্মের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ করা সমীচীন নয়।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন গণফোরাম সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান।
‘মুক্তিযুদ্ধ ও ৭২ এর সংবিধান প্রশ্নবিদ্ধ করলে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তি লাভবান হবে’ শীর্ষক শিরোনামের বিবৃতিতে বলা হয়, ৭২ এর সংবিধান নয়, কবর রচনা করতে হবে দীর্ঘ ১৫ বছর জনগণের অধিকার হরণকারী, হাজার হাজার মানুষকে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা এবং জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার হত্যাকারী হাসিনা ও তার দোসরদের। বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশে জনগণ তাদের সাজা দিতে চায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দুঃশাসনকালে সংবিধান লঙ্ঘন করে এবং অবৈধ সংশোধনী এনে জনতাকে নিষ্পেষিত করা হয়েছে, সে দায় সংবিধানের নয়। অপরাধ করেছে শেখ হাসিনা, তারই বিচার করতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমুন্নত, সে সংবিধানের মূল ভিত্তি বৈষম্যমুক্ত সমাজব্যবস্থা। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মূল ভিত্তি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশের সংবিধান ও গণঅভ্যুত্থানের মূল স্পিরিটের কোনও অমিল নেই। মুক্তিযুদ্ধ ও ৭২ এর সংবিধান প্রশ্নবিদ্ধ করলে গণঅভ্যুত্থানে পরাজিত শক্তি লাভবান হবে।
বিবৃতিতে মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ৭২ এর সংবিধান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জনআকাঙ্ক্ষার যে প্রতিফলন ঘটেছে, তা পূরণে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়। তাই পুনরায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে। সুতরাং ৭২ এর সংবিধানে সংস্কার এনে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব এবং এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
গণফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়, দলমত নির্বিশেষে সবার প্রতি আহ্বান সংবিধানের যৌক্তিক সংস্কারের মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ঐক্য সুসংহত রাখতে আসুন জাতীয় ঐক্য অক্ষুণ্ন রাখি।