রাজনৈতিক কর্মসূচি দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘গুলিবর্ষণের ক্ষমতা’ চিরতরে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্দোলন দমাতে গুলি করে হত্যার যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচি দমনের জন্য গুলির ব্যবহার, শটগানের ব্যবহার চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে।’
আজ সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘এখন থেকে কোনো বর্বর শাসকের কোনো বর্বর আইন প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এমন একটি পরিবেশের উত্তরণ ঘটাতে হবে, এমন সংস্কার করতে হবে, কোনো সরকারই যেন রক্তচক্ষু দেখিয়ে জনগণকে দমন করতে না পারে। আমরা সেই পরিবেশ চাই। স্বাধীন চিন্তা, স্বাধীন মতামত প্রকাশে কেউ যেন বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারে।’
ভারতে থেকে শেখ হাসিনা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছেন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘আবার শেখ হাসিনা তাঁর বর্বর শাসন ফিরে পাওয়ার জন্য মরিয়া। উনি পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় পেয়ে নানা ধরনের উসকানিমূলক কাজ এবং চক্রান্ত করার জন্য তাঁর নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছেন। কিন্তু জনগণের সাড়া না পেয়ে এখন তাঁরা হরতাল আর অবরোধ করছেন অনলাইনে। জনগণের মধ্যে তাঁরা যেতে পারছেন না।’
এ সময় দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা ১৬-১৭ বছর যেটা বঞ্চিত হয়েছি, জনগণ বঞ্চিত হয়েছে, সেই বঞ্চনার দুঃস্বপ্ন যাতে দূর হয়, সেই জন্য অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটা তারিখ অবশ্যই অন্তর্বর্তী সরকারকে দিতে হবে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বিএনপি সংস্কারের বিরুদ্ধে নয়। আমরা সংস্কার কী কী হওয়া উচিত, সেটা বলেছি।’
রিজভী আরও বলেন, ‘সংস্কার তো একটা চলমান প্রক্রিয়া। এটা যুগ যুগ ধরে চলবে। জনগণের যে দাবি, এই দাবির ওপর ভিত্তি করেই তো সংস্কার হবে। কিন্তু তার জন্য নির্বাচন আটকিয়ে রাখার কোনো অর্থ হয় না।’
ছাত্র-জনতার বিপ্লবের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য এক রক্তঝরা আন্দোলনে ১৬ বছর বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মীর আত্মদান আর তাঁদের রক্তভেজা শার্টের বিনিময়ে আজকের এই পরিবেশ। আমরা একটি পর্যায় পার করেছি। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আমাদের আসতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’