Homeরাজনীতিমৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজহারের মুক্তি না হলে লাগাতার কর্মসূচির হুমকি জামায়াতের

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আজহারের মুক্তি না হলে লাগাতার কর্মসূচির হুমকি জামায়াতের


মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াতের নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তি না হলে সারা দেশে বিক্ষোভ-সমাবেশ চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘এ টি এম আজহারের মুক্তি না হলে জামায়াতের সমাবেশ, বিক্ষোভ, আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে সরকারের কাছে দাবি, অবিলম্বে দলের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরসহ দেশের সব মহানগরে এবং জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে দলটি। বিকেলে রাজধানীর পল্টন মোড়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান। সমাবেশ শেষে পল্টন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন দলের নেতা-কর্মীরা।

বেলা ৩টা থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে সমাবেশস্থলে আসেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। সমাবেশে জামায়াতের নেতারা বলেন, ‘সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। তাঁকে বারবার রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। ন্যূনতম চিকিৎসাসেবাও দেওয়া হয়নি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের বিচারিক কার্যক্রমগুলো সারা বিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত। স্বৈরাচারের আমলে গ্রেপ্তার হওয়া এ টি এম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তাঁর প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়।’

সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ তার প্রথম হিংস্র থাবাটি বিস্তার করেছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের ওপর। সব শীর্ষ নেত বন্দী হওয়ার পর প্রিয় সংগঠন এ টি এম আজহারুল ইসলামের ওপর সেই সময়ের গুরুদায়িত্ব তুলে দিয়েছিল। ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে সংগঠনকে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। পথের কাঁটা সরানোর বাকিদের মতো ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হলো। এখনো তিনি মুক্ত হননি। বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত হলো, ফ্যাসিবাদের সবচেয়ে কঠিন সাক্ষী আজহারুল ইসলাম সাহেব মুক্ত হলেন না কেন?’

পল্টনে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের ঢল। ছবি: সংগৃহীত

হুঁশিয়ারি দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘কোন জিনিস তাঁকে এখনো আটকে রাখতে বাধ্য করেছে? কেন এ বৈষম্য? আজহারুল ইসলাম সাহেব কবে মুক্তি পাবেন তা সুস্পষ্টভাবে সরকারের কাছে জানতে চাই। স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, তাঁর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সমাবেশ, বিক্ষোভ, আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আশা করব, সরকার বাকি মজলুমদের যেভাবে মুক্তি দিয়েছে, সর্বশেষ মজলুমটাকেও মুক্তি দিয়ে দেশবাসীর কাছে ফিরিয়ে দেবে।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘১৩টি বছর তাঁকে আর ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। আর ১৩টি মিনিট তিনি জেলের ভেতরে থাকুন, আমরা তা চাই না। আমরা ভদ্র; কিন্তু আমরা বোকা নই। ভদ্রতার এই উপহারকে কেউ যেন দুর্বলতা মনে না করে।’

জামায়াতে ইসলামী কোনো অপশক্তির কাছে কখনো মাথা নত করেনি উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘জীবন দিয়েছে, আপস করেনি। বহু আপসের প্রস্তাব এসেছিল। ফাঁসির কাষ্ঠে পাঠিয়ে দেওয়ার আগে জনে জনে দফায় দফায় প্রস্তাব এসেছিল। বাংলাদেশের বীর সন্তানেরা ওই সব প্রস্তাবকে পায়ের তলায় ফেলে দিয়েছিলেন। আমরা তাঁদের উত্তরসূরি।’

নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘কেন আমাদের নিবন্ধন আটকে রেখেছেন? নিবন্ধন তো জালিম সরকার কেড়ে নিয়েছিল। সেই জুলুম আপনারাও কী আমাদের ওপর করবেন? এ জন্য হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে? আমরা বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো বৈষম্য সহ্য করব না।’

জামায়াত কারও চোখরাঙানি পরোয়া করে না জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের নতুন করে আর কেউ চোখ রাঙাবেন না। ফ্যাসিবাদের ভাষায় কেউ কথা বলবেন না। কথা বলবেন রাজনীতির ভাষায়, আমরা ওয়েলকাম করব। সমালোচনা করবেন, চুমু দেব। কিন্তু মেহেরবানি করে চোখ রাঙাবেন না।’

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘এ টি এম আজহারুল ইসলাম সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ১৪ বছর কারারুদ্ধ থাকলেও সরকার তাঁর মুক্তির ব্যবস্থা করেনি। দলীয় নিবন্ধন এবং প্রতীকের বিষয়টি অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। টালবাহানা বন্ধ করে অবিলম্বে এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তি, দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, মোবারক হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত