Homeরাজনীতিবিএনপি অতীতে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে, এখনো করবে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি অতীতে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে, এখনো করবে: মির্জা ফখরুল


বিএনপি অতীতে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করেছে এবং এখনো করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘কয়েকজন মানুষ, গুটিকতক মানুষ, তারা টার্গেট করেছে বিএনপিকে। মিথ্যা প্রচারণা, অপপ্রচার করে বিএনপিকে হেয়প্রতিপন্ন করতে চায়। কারণ বিএনপি সেই দল, যারা এই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করেছে অতীতে এবং এখনো করবে।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় শহীদ সেনা দিবসে পিলখানায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে বিএনপি এই সভার আয়োজন করে।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন হলে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, পরে বলবেন যে আমি সতর্ক করিনি, আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসাথে কাজ না করতে পারেন, নিজেরা যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, মারামারি কাটাকাটি করেন, এই দেশ এবং জাতির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে।’

দলের নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করব, আপনার ধৈর্য ধরবেন। আপনারা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। সেই সঙ্গে সমগ্র দেশের মানুষকে আহ্বান জানাতে চাই—আজকে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করে, তর্ক-বিতর্ক বন্ধ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। যাতে ঐক্যবদ্ধ থাকার মধ্য দিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক একটা জায়গায় পৌঁছাতে পারি।’

এ সময় শক্ত হাতে দেশ পরিচালনা করতে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানকে আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শক্ত হাতে সরকার পরিচালনা করুন। কেউ যেন না বলে যে আপনি কোনো পক্ষপাতিত্ব করছেন। আমরা আশা করব, সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব, সংস্কার যেটা ন্যূনতম প্রয়োজন, সেটা করে দ্রুত নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে স্থিতিশীলতা, শান্তি এবং ভবিষ্যতের জন্য সমৃদ্ধি আনবেন, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

নতুন সুযোগকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আজ বাংলাদেশকে নতুন করে একটি সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগকে আজকে আবার ধ্বংস করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। শেখ হাসিনা আশ্রয় নিয়েছেন ভারতে এবং সেখান থেকে তিনি চক্রান্ত করছেন, পরিকল্পনা করছেন যে কী করে এই বিজয়ের, এই গণ-অভ্যুত্থানের ফলাফলকে নস্যাৎ করা যায়। সেখান থেকে তিনি চক্রান্ত করছেন, কী করে বাংলাদেশে আবার নৈরাজ্য সৃষ্টি করা যায়, কীভাবে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যায়, তারই চক্রান্ত দেখছি আমরা আজকে বিভিন্নভাবে। বিভিন্ন পক্ষ থেকে একটা অস্থির অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে।’

নির্বাচনের বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আসা একটি সরকার। আমাদের সবার প্রত্যাশা, এই সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে। আমরা বারবার বলে আসছি, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না করলে কোনোমতেই আমরা স্থিতিশীল অবস্থা পাব না। সে জন্য আমরা প্রথম থেকেই একটি কথা বলে আসছি, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটার জন্যই আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। আজকে সেই জায়গায় (নির্বাচনের বিষয়ে) বিভিন্ন রকম প্রশ্ন তুলে একটা নৈরাজ্যের দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘কিছুসংখ্যক মানুষ অন্যায়ভাবে দেশকে, দেশের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলার চেষ্টা করছেন। বিভিন্নভাবে সবাইকে রাস্তায় জড়ো করার চেষ্টা করছেন, দেশে একটা নৈরাজ্য তৈরি করার চেষ্টা করছেন। এটা কোনোমতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং স্থিতিশীলতার জন্য শুভ নয়।’

পিলখানার হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততার অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের শত্রুরা পরিকল্পিতভাবে একটি বিদ্রোহ ঘটিয়েছে বিডিআরে। বাংলাদেশের শত্রুদের সঙ্গে যোগসাজশ করে এর মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমিক চৌকস সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে। সেদিন যিনি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন শেখ হাসিনা, সেদিন তিনি কী ভূমিকা পালন করেছিলেন? একই সঙ্গে সেদিনের সেনাপ্রধানকেও প্রশ্ন করি, তিনি তাঁর সহকর্মীদের জন্য কী ভূমিকা রেখেছিলেন?

সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

এদিন সকালে প্রথমবারের মতো পালিত জাতীয় শহীদ সেনা দিবসে বনানী সামরিক কবরস্থানে নিহত সেনাসদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘শহীদ সেনাসদস্যদের আত্মত্যাগ যেন বিফলে না যায়। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে যেন আমরা আপস না করি। আমরা যেন বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে করতে পারি—আজকে এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।’

এ সময় পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ, সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি উদ্‌ঘাটন ও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত