বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, গণতন্ত্রের প্রত্যাশা যদি পূরণ না হয়, তাহলে সংকট আরও বাড়বে। এই সংকটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নির্বাচিত একটি সরকার দরকার।’
আজ মঙ্গলবার নীলফামারী শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, যে ভোটাধিকার মানুষের ছিল না, সেই অধিকার যত দ্রুত সম্ভব ফেরত দিয়ে এ দেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আন্দোলনের সময় আমাদের নেতা (তারেক রহমান) বলেছিলেন যে ফয়সালা হবে কোথায়। এই রাজপথেই ফয়সালা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকারের কাছে চাওয়া, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মধ্যে আনা, যেন মানুষ স্বাভাবিকভাবে জীবন ধারণ করতে পারে, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। এ বিষয়গুলো আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি। ভবিষ্যতে এটা মীমাংসা করা যায় কী করে, বিএনপির সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চায়। আর চায় বলেই আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। গণতন্ত্রের পিপাসার প্রত্যাশায়, স্বৈরাচারকে পতন ঘটিয়ে, ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়ে বাংলাদেশে এখন জঞ্জাল মুক্ত হওয়ার পথে আছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা চাইছি, যাতে বাংলাদেশে সঠিক, স্বাভাবিক, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ তার পছন্দের দল-প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে এবং এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার তৈরি হবে যারা দেশ পরিচালনা করবে।’
বিগত সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ গুম-খুন নিখোঁজ হয়েছে এই দেশে গণতন্ত্রের প্রত্যাশায়। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, সর্বশেষ ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান। ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে।
‘এখন প্রত্যাশা মানুষের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের। কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ একটু স্বস্তির সঙ্গে বসবাস করতে চায়, শ্রমিক তাঁর অধিকার চায়, সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে জীবন যাপন করতে চায়। সেই জায়গায় আমাদের নেতা তারেক রহমান সংগঠনকে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে পূর্বের মতোই মানুষের পাশে দাঁড় করাতে চায়। সেই লক্ষ্যেই আজকের এই সভা। এই সভা থেকেই আমরা আগামী দিনের সেই কর্মসূচি গ্রহণ করব।’
তিনি বলেন, ‘সবাই নির্বাচন চাচ্ছে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে। অর্থাৎ সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে কোনো সংঘাত নেই। জামায়াত-বিএনপির মধ্যে সংঘাত নাই। একটি ভালো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় গ্রহণ করার জন্য, অতিরিক্ত সময় যাতে ব্যয় না হয়।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘১৬ বছর ধরে বিএনপি মুখিয়ে আছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। সেহেতু এখন নতুন কোনোভাবে প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। ১৬ বছর ধরে আমাদের একটি নির্বাচনের দাবি যাতে মানুষ ভোট দিতে পারে।’
জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী শামীম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম প্রমুখ।