রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি, সংবিধান বাতিল ও প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠন দুটোর নেতারা গত কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করতে ছুটছেন। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (২৭ অক্টোবর) বিকাল ৪টা থেকে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় নাগরিক কমিটি পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, এসময় রাষ্ট্রপতির অপসারণ বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত তবে প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলবে। সংবিধান বাতিল ও প্রক্লেমেশন অব সেকেন্ড রিপাবলিক ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।
এসব ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য তৈরিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাবে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ইতোমধ্যে বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন, জামায়াতসহ একাধিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে সংগঠন দুটি।
রবিবার রাজধানীর মালিবাগে ১২ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন— হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, আরিফ সোহেল, উমামা ফাতেমা, আব্দুল হান্নান মাসউদ, নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী, সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব।
বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন মোস্তফা জামাল হায়দার, শাহাদাত হোসেন সেলিম, সৈয়দ এহ্সানুল হুদা, মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, মো. ফারুক রহমান, শামসুদ্দিন পারভেজ, এ. এস. এম. শামীম।
১২ দলীয় জোটের নেতারা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, আজকের বৈঠকটি অনেকটাই অম্লমধুর ছিল। ছাত্রনেতারা যেসব বিষয়ে ঐকমত্য চাইছেন, এরমধ্যে অন্যতম রাষ্ট্রপতির অপসারণের দাবি। আর এক্ষেত্রে ১২ দলীয় জোট জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রপতির প্রতি তাদের কোনও দুর্বলতা বা সহানুভূতি না থাকলেও এই মুহূর্তে তার অপসারণ সাংবিধানিক সংকটের কারণ হতে পারে। এর থেকে নানাবিধ সমস্যার উদ্রেক করতে পারে।
বৈঠকে বর্তমান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের দুয়েকজন উপদেষ্টার বক্তব্যের বিষয়ে জোটের নেতারা উল্লেখ করেন। জোট মনে করে, দ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনি ট্রেনে ওঠা দরকার।
জানতে চাইলে রবিবার সন্ধ্যায় বাংলা ট্রিবিউনকে ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির বিষয়ে কোনও সহানুভূতি নাই আমাদের জোটের। এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতিকে সরালে বহুবিধ সমস্যার আশঙ্কা করছি আমরা। বৈঠকে আমরা ছাত্রনেতাদের বলেছি, এই বিষয়ে সম্পূর্ণ জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলা দুরূহ কাজ হবে। একইসঙ্গে বিএনপির ভূমিকার সঙ্গে আমরা একমত।’
বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম এ প্রসঙ্গে যোগ করেন, বিএনপিকে বাদ দিয়ে কোনও রকম সিদ্ধান্তে আসা যাবে না।
প্রসঙ্গত, রবিবার গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের।