গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হলেও এ মঞ্চে জাতীয় নাগরিক কমিটি, গাজীপুর জেলা ও মহানগরের নেতৃবৃন্দ, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ আওয়ামী বিরোধী বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের এতে অংশগ্রহণ করেছেন। আজ শনিবার দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দুপুরে মহানগরীর রাজবাড়ী মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকে এ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। রাজবাড়ী মাঠে একটি ট্রাকের ওপর তৈরি করা অস্থায়ী মঞ্চে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় ও গাজীপুরের নেতারা বক্তব্য রাখছেন।
দুপুর ১২টার টার দিকে শুরু হওয়া সমাবেশে বক্তারা আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের ট্রাইব্যুনালে বিচার, শুক্রবার রাতের হামলায় জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে বিচার, উপদেষ্টা পরিষদ ও প্রশাসনে থাকা আওয়ামী লীগের দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, আওয়ামী সন্ত্রাসী-দুর্নীতিবাজদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তাদের অভিযোগ, সাবেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা হয়েছে, সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটকে রাখা হয়েছে, তাদের বাঁচানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। পরে ১৫ জন শিক্ষার্থী ঘটনা কি হয়েছে, জানার জন্য সেখানে গেলে ওই বাড়ির আশপাশে লুকিয়ে থাকা সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রাসেল ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের অনুগত আওয়ামী সন্ত্রাসী ও দোসররা পরিকল্পিতভাবে দা, বটিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে শিক্ষার্থীরা আহত হয়।
তাদের আরও অভিযোগ, ঘটনার পর পর শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করার জন্য পুলিশকে অনেকবার কল দেওয়া হলেও তারা সময়মতো সাড়া দেয়নি। কয়েক ঘণ্টা পর সেনা সদস্যরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজবাড়ী মাঠ থেকে শুরু হয়ে মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে নেতৃবৃন্দসহ বিপুলসংখ্যক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আলী নাসের, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুরের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মুহিম, শুক্রবারের রাতে হামলায় আহত শিক্ষার্থী নাবিল, ইসলামী ছাত্র শিবিরের গাজীপুর মহানগরীর শিক্ষা ও পাঠাগার সম্পাদক প্রমুখ।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেলেও এখনো তার দোসররা আমাদের আশপাশে রয়েছে। সমাবেশ চলাকালেও আমাদের ভাইদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনের অনেকেরই এ বিপ্লবের প্রতি আনুগত্য নেই। আমাদের সংযমের সাথে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। কোনোভাবেই বিশৃঙ্খলা করা যাবে না।’