গাজীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হকের অনুসারীদের হামলায় আহত কিশোর কাশেম খান (১৭) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এ ঘটনায় ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন। একইসঙ্গে কাশেম হত্যার প্রতিবাদে কফিন মিছিল করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে কাশেমকে ‘প্রতিবিপ্লবের প্রথম শহীদ’ উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘গাজীপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত কাশেম শহীদ হয়ে গেছেন। প্রতিবিপ্লবের প্রথম শহীদ আমার এই ভাই। ইন্টেরিম, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো, করতে হবে।’
এরপর আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আয়নাঘর, হাসিনার হত্যা, প্রতিবিপ্লবে আমার ভাই কাশেম শহীদ হয়েছে। যথেষ্ট হয়েছে। এখন আর পেছনে ফেরার পথ নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতেই হবে।’
তিনি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে আর লেখেন ‘#ব্যানআওয়ামীলীগ’।
কাশেম হত্যার প্রতিবাদে কফিন মিছিল
কাশেম হত্যার প্রতিবাদে আজ (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জানাজার আয়োজন করা হয়েছে। জানাজার পর আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে কফিন মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
একইসঙ্গে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে কাশেমের গায়েবানা জানাজা ও খাটিয়া মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।
নিহত কাশেমের পরিচয় ও হামলার ঘটনা
নিহত কাশেম খান গাজীপুরের বোর্ডবাজার দক্ষিণ কলমেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা জামাল হাজী দুই বছর আগে মারা গেছেন, মা অন্যত্র বিয়ে করেছেন। তিন রুমের একটি বাড়ি ভাড়া দিয়ে তিনি জীবিকা নির্বাহ করতেন।
গত শুক্রবার রাতে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের অনুসারীদের হামলায় কাশেম গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাকে রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বিকালে তার মৃত্যু হয়।
বিচারের দাবি ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
কাশেম হত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং হত্যার ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।