Homeরাজনীতিঅন্তর্বর্তী সরকার লক্ষ্য থেকে কিছুটা বিচ্যুত: তারেক রহমান

অন্তর্বর্তী সরকার লক্ষ্য থেকে কিছুটা বিচ্যুত: তারেক রহমান


অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের লক্ষ্য থেকে ‘কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তারেক রহমান। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বারের আইনজীবীদের এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি যে, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির কথা-বার্তা থেকে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, তারা এবং বিভিন্ন ব্যক্তির আলোচনা থেকেও ফুটে উঠছে যে, তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) সম্ভবত তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন। ক্ষেত্র বিশেষে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন স্টেটমেন্ট থেকে বিভিন্ন রকম কনফিউশন তৈরি হচ্ছে। মানুষ বিভিন্নভাবে কনফিউজড হচ্ছে।’

‘খুব স্বাভাবিকভাবে রাজনীতিতে যখন কনফিউশন থাকবে, তখন অস্থিরতা দেখা দেবে। আমাদের এই অস্থিরতার কারণে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হবে। কারণ, যখনই রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যদি আমরা এনসিওর করতে না পারি, তাহলে আমরা যে যত সংস্কারই ঘোষণা করি না কেন, যে যত নীতি গ্রহণ করি না কেন, কোনটাই সাকসেসফুল হবে না।’

তারেক বলেন, ‘দেশের রাজনীতি অস্থির হলে এটি ইফেক্ট করবে অর্থনীতি এবং অর্থনীতি ইফেক্ট করবে সব কিছুতে। এমনকি আপনারা যারা আইন পেশাতে আছেন আপনার পেশাকেও ইফেক্ট করবে খুব স্বাভাবিকভাবে।’

‘একজন ক্ষুদ্র মুদির দোকানদার বলি, একজন রিকশাচালক বলি, একজন সিএনজিচালক বলি, একজন মাঝারি ব্যবসায়ী বলি যে কারও কথাই বলি না কেন, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ইফেক্ট করবে এবং প্রতিটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

সংসদ কার্যকরে বিলম্ব হলে অস্থিরতা বাড়বে

তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ প্রতিটি মানুশের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত— অবশ্যই দেশকে আগামী দিনে যত দ্রুত সম্ভব একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসা। আমরা যখন দেশকে স্থিতি অবস্থার মধ্যে নিয়ে আসবো, সারা পৃথিবীতে যেটি গ্রহণযোগ্য বিষয় যে, রাজনৈতিক অস্থিরতা বলুন বা রাজনৈতিক আলোচনা বলুন, রাজনৈতিক তর্ক-বির্তক বলুন, সেটিকে সংসদের মধ্যে নিয়ে আসা। সংসদই হচ্ছে সবচেয়ে মূল জায়গা যেখানে আলোচনা সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, সেটি সংসদের ভেতরে হয়ে থাকে।’

‘আমরা সংসদকে কার্য্কর করতে যত দেরি করবো— এই অস্থিরতা, এই তর্ক-বিতর্ক সবকিছু সংসদের বাইরে চারদিকে ছড়াতে তত থাকবে। সংসদের বাইরে যত বেশি এটি ছড়াবে, তত সব জায়গায় বিভিন্নভাবে অর্থনীতি থেকে শুরু করে, সামাজিক অবস্থা থেকে শুরু করে সব জায়গায় অস্থিরতা দেখা দেবে, যা সামগ্রিকভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঢাকা বার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগ ঢাকা বার সমিতির ভবনের মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

আইনজীবীদের সমাজের দর্পণ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা যত দ্রুত দেশে একটি স্থিতি অবস্থা আগে করবো, নাকি ওটি আগে করবো, এই তর্ক-বিতর্ক যদি চলতে থাকে, তাহলে সামগ্রিকভাবে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আরও বেশি।

‘সেজন্য আমরা বিএনপির অবস্থান থেকে মনে করি, রাজনৈতিক দল হিসেবে, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মনে করি, দেশে যত দ্রুত সম্ভব একটি স্থিতি অবস্থা আনা সম্ভব হবে, তত দ্রুত দেশকে ধবংসের কিনারা থেকে ধীরে ধীরে বের করে, সরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।’

তারেক বলেন, ‘অনেকে বলে থাকেন, কোনও কোনও ব্যক্তি বলে থাকেন— নির্বাচন হলে কী সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। নির্বাচন হলেই কি সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে, সে কথাটি এ্ভাবে না বলে আমরা চিন্তা করতে পারি— নির্বাচন হলে দেশে একটি স্থিতি অবস্থা আসবে এবং ধীরে ধীরে রিফর্ম কাজগুলো শুরু হবে। সমস্যাগুলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে কমা শুরু করবে।’

‘নির্বাচন হলে সমস্যাগুলোর সমাধান কীভাবে করা যায়। এটি দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন বিভিন্ন মানুষ, যখন স্বাভাবিকভাবে তারা বসবেন, আলোচনা করবেন তারা কাজ করবেন। একদিনে কোনও কিছুই হবে না। কিন্তু সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা শুরু হবে।’

তারেক বিভিন্ন ব্যক্তি এবং গণমাধ্যমে বিভিন্নজনের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘প্রত্যেক জায়গায় দেখছি, অস্থিরতা বিরাজ করছে। এই অস্থিরতা বিরাজ করার হয়তো মূল কারণ হতে পারে যে, স্বাভাবিক এই মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আছে। এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের আমরা মনে করি, দেশের মানুষ যে সিদ্ধান্ত নিতে চায়, সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করা এবং দেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করা। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে তাদেরকে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা করা। এটি হওয়া উচিত তাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) মূল লক্ষ্য।’

একইসঙ্গে দুই বছরের বেশি সময় আগে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নিয়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা প্রণয়ন হওয়ার বিষয়টি আইনজীবীদের সামনে তুলে ধরে  এই ৩১ দফার বুকলেট জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোভেট খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, বিএনপি মিডিয়া সেলের মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ঢাকা বারের অ্যাডভেকেট খোরশেদ মিয়া, অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত