Homeবিনোদনশুটিংয়ে শিল্পীর নিরাপত্তা নিয়ে এজাজের তিন অভিজ্ঞতা

শুটিংয়ে শিল্পীর নিরাপত্তা নিয়ে এজাজের তিন অভিজ্ঞতা


ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যের শুটিংয়ের ক্ষেত্রে শিল্পীদের নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অথচ অনেক নির্মাতা বিষয়টি মাথায় রাখেন না। ফলে শুটিং করতে গিয়ে নানা অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় শিল্পীদের। আবার বিপরীত দিকও আছে। শিল্পীর স্বাচ্ছন্দ্যের কথা অনেক নির্মাতাই ভাবেন সবার আগে। অভিনেতা এজাজুল ইসলাম জানালেন এমন তিনটি ঘটনার কথা।

আপনার মাথায় বাড়ি দেওয়া হবে

একবার একটি নাটকের শুটিংয়ে গেছেন এজাজুল ইসলাম। পরিচালক তাঁকে বললেন, ‘আপনার মাথায় একটা বাড়ি দেওয়া হবে।’ শুনে তো আকাশ থেকে পড়েন এজাজ! ‘আরেহ! আমার মাথায় বাড়ি দেবে মানে!’ আশ্বস্ত করলেন পরিচালক, ‘আস্তে করে দেবে।’ গল্পের প্রয়োজনে দৃশ্যটি দরকার হলেও বেঁকে বসলেন এজাজ, ‘ইমপসিবল। মাথায় কেউ এভাবে বাড়ি দিতে পারে না। বাড়িটা একটু এদিক-ওদিক হওয়া মানেই ইন্টারনাল হ্যামারেজ এবং আমার মৃত্যু। এটা তো আমি করবই না।’ পরিচালক বড় বেকায়দায়। কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। আরও কিছুক্ষণ নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা হলো। এজাজ সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘আমি কখনোই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অভিনয় করব না।’ পরিস্থিতি বুঝে পরিচালক সিদ্ধান্ত নিলেন, মাথায় বাড়ি না দিয়ে দৃশ্যটি অন্যভাবে করা হবে। বদলে ফেলা হয় দৃশ্যটি।

ফ্যান ধরে ঝুলে থাকতে হবে

দ্বিতীয় ঘটনা একটি বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ের। সেটে যাওয়ার পর পরিচালক জানালেন, একটি দৃশ্যে এজাজকে সিলিং ফ্যান ধরে ঝুলে থাকতে হবে। এজাজ বলেন, ‘শুটিংয়ের সব আয়োজন কমপ্লিট। বিজ্ঞাপনের বিশাল আয়োজন। এবারও অস্বীকৃতি জানালাম, বললাম, অসম্ভব। ফ্যান ধরে আমি ঝুলব কী করে? আপনি কি ফ্যানটা চেক করে দেখেছেন আগে? মিনিমাম ২০-৩০ বছর আগের ফ্যান। যদি ফ্যানটা ছিঁড়ে পড়ে! কী হবে তখন? আমি ঝুলব না।’ উপায়ান্তর না দেখে ডামি আনার ব্যবস্থা করলেন পরিচালক। অর্থাৎ অন্য কেউ এজাজের হয়ে শুটিং করবেন, পর্দায় সেটা এজাজ করেছেন বলেই মনে হবে। অ্যাকশন কিংবা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যে অভিনয়শিল্পীর বদলে কাজ করেন যাঁরা, তাঁদের ডামি বা স্ট্যান্টম্যান বলা হয়। এজাজ বলেন, ‘এফডিসি থেকে ডামি এনে তাকে দিয়ে শটটা নেওয়া হলো। আমি তো বয়স্ক মানুষ। সে একজন তাগড়া জোয়ান। আমি দেখলাম, শুটিংয়ের সময় সে ছেলেরও দম যায় যায় অবস্থা।’

মাটি নয়, খেয়েছিলেন কাঁচকলা ভর্তা

হুমায়ূন আহমেদের একটি নাটকের শুটিংয়ের ঘটনা। শিল্পীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পরিচালকের কতটা সচেতন হওয়া উচিত, সেই কথাই স্মরণ করিয়ে দেয় এ ঘটনা। হুমায়ূন আহমেদের ‘তারা তিনজন’ নাটকে মাটিবাবার মাটি খাওয়ার সেই দৃশ্য মনে আছে নিশ্চয়ই। অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন, শুটিংয়ে কি সত্যিই মাটি খেয়েছিলেন এজাজ? তাঁর মুখেই শোনা যাক শুটিংয়ের পেছনের গল্প।

এজাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্ক্রিপ্টে তো এক চামচ মাটি খাওয়ার গল্প আছে। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ডাক্তার, তুমি কী করবা এখন? মাটি তো এক চামচ খাইতে হবে। আমি বললাম, স্যার খাব। আমার কথা শুনে তিনি রেগে গেলেন। ফাইজলামি করো? মাটি খাবা মানে? এই মাটি কি ব্যাকটেরিয়া ফ্রি? এটা কি তোমার জন্য সেফ?’

শুটিং বন্ধ করে দিলেন হুমায়ূন আহমেদ। নির্দেশ দিলেন, মাটির মতো দেখতে এমন কিছু খুঁজতে, যেটা নিরাপদ এবং অভিনেতা খেতে পারবেন। হঠাৎ মোক্ষম এক আইডিয়া এল এজাজুল ইসলামের মাথায়। তিনি বলেন, ‘স্যারকে বললাম, এক কাজ করি তাহলে। কাঁচকলা সেদ্ধ করে একটু হলুদ দিয়ে ভর্তা করি। জয়দেবপুরের মাটি তো লাল। তাহলে ওটার রং একই রকম হবে। তিনি বললেন, তাহলে তা-ই করো। কাঁচকলা সেদ্ধ হলো। হলুদ দিয়ে মাখা হলো। মাটির মতো রং হলো। সেই কাঁচকলা আমি এক চামচ খেলাম।’





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত