শুক্রবার নিখোঁজ হওয়ার পর মঙ্গলবার রাত এগারোটায় হলে ফিরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক খালেদ হাসান। তখন মানসিক অবস্থা ভালো না থাকায় কারও সাথে কথা বলেননি তিনি। তার নিখোঁজ হওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন খালিদ ও তার বাবা।
খালেদের বাবা জানিয়েছেন, এরআগে ক্লাস নাইন-টেনে থাকা অবস্থায় খালেদ এই রকম নিখোঁজ হয়ে যান। পরে ফিরে এলে খালেদ আর কিছু বলতে পারেনি। এমনকি খালেদ জানতোও না সে নিখোঁজ ছিল। খালেদও জানান তিনি এবার প্রথম তার এই মানসিক অবস্থা ও হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে পারেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে খালেদ হাসানের বাবা এমন মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে খালেদ ও তার পিতা লুৎফর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
খালেদ হাসানের বাবা প্রথমে খালেদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানিয়ে বলেন, চিকিৎসক তাকে কয়েকটা শারীরিক ও মানসিক টেস্ট দিয়েছেন, তবে তার বর্তমান শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভালো।
লুৎফর রহমান বলেন, খালেদের ছোটবেলা থেকে জিনের আছর ছিল বলে তারা জানতেন। ৯ম বা ১০ম শ্রেণিতে থাকাকালীন সে একবার এরকম নিখোঁজ হয়ে যায়। কয়েকদিন পরে তাকে পাওয়া যায়। পরে গ্রামের সংস্কার অনুযায়ী তাকে ঝাড়ফুঁক করা হয়। কিন্তু এই বিষয়টি আমরা খালেদকে জানানো হয়নি।
‘এবার হারিয়ে গেলে তিনি বুঝতে পারেন ছেলে কোনও সমস্যায় রয়েছে। যখনই মানসিক চাপ অনুভব করে তখন তার এই অবস্থা হয়।’
ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আত্মগোপনে থাকার অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে খালেদ বলেন, ডাকসু নিয়ে এখনও আমার কোনও পরিকল্পনা নেই। আমি দাঁড়াবো কিনা সেটি এখনও ঠিক করিনি। তবে যদি দাঁড়াই তার জন্য আমাকে এধরণের পথ বেছে নিতে হবে এমনটি আমার মনে হয় না। তবে ডাকসু নিয়ে আমার এখনও কোনও পরিকল্পনা নেই।
খালেদ এখন এই সমস্যার জন্য নিজের মানসিক অবস্থাকেই দায়ী করছেন। প্রথমে এই অবস্থার জন্য তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করলেও এখন তিনি ভাবছেন তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা যেটা সে জানতো না তার জন্যই এমন ঘটনা ঘটেছে।
খালেদের আগে হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ডাক্তারকে জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তার বাবা বলেন, জানানো হয়েছিল কিন্তু ডাক্তার আগের বিষয় কিছু জানাননি। ডাক্তার তার এখনকার মানসিক অবস্থার বিষয়ে গুরুত্ব দেন। কিছু টেস্ট দেওয়া হয়েছে, যার রিপোর্ট শনিবার পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান। এরপর সবকিছু বুঝা যাবে।