পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে, অর্থনৈতিক সংস্কার কেবল একটি খাতের সংস্কার নয়। এই শ্বেতপত্রে যে খাতগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার সংস্কার অন্যান্য খাতের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হিসেবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের অন্যান্য খাতের সংস্কারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সংস্কারের সমন্বয় করার জন্য একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি হাতে নিতে হবে।
অর্থনৈতিক খাতের পাহাড়সম দুর্নীতি ও অনিয়মকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে অর্থনৈতিক সংস্কারের সঙ্গে দোষী ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারব্যবস্থায় নিয়ে আসার জন্য আমাদের একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থার প্রয়োজন। বাজারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ এবং সিন্ডিকেট ভাঙার জন্যও যথাযথ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার থাকার সঙ্গে সদিচ্ছারও প্রয়োজন রয়েছে। এখানে আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়সাধন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শ্বেতপত্র কমিটি তাদের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার জন্য একটি উপদেষ্টা কাউন্সিল গঠন করার কথা বলেছে, যারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করবে। তবে ভিন্ন ভিন্ন খাতের সংস্কারপ্রক্রিয়াকে বিচ্ছিন্নভাবে বাস্তবায়ন করার রূপরেখা হাতে নিলে নানাবিধ সংকীর্ণতা দেখা দিতে পারে। তাই সুনির্দিষ্ট সময়কালকেন্দ্রিক একটি সমন্বিত জাতীয় রোডম্যাপ ঘোষণা করা প্রয়োজন।
আইনের শাসন ও জবাবদিহিমূলক স্বচ্ছ ব্যবস্থা গড়ে তোলার এখনই সময়। কেননা আমূল সংস্কারের মাধ্যমে দেশ গঠনের এমন সুযোগ বাংলাদেশের মানুষের জন্য বারবার আসবে না।
● বুলবুল সিদ্দিকী সহযোগী অধ্যাপক, রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়