নদীকে বদ্ধ জলাশয় হিসেবে দেখিয়ে বন্দোবস্ত দেওয়ার ঘটনা সারা দেশে কমবেশি আছে। বন্দোবস্ত তিন ধরনের হয়। যেগুলো ২০ একরের চেয়ে বড় জলমহাল, সেগুলো ডিসির কার্যালয় থেকে, ২০ একরের নিচেরগুলো ইউএনওর কার্যালয় থেকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। ছয় বছর কিংবা এর চেয়ে বেশি বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া হয় ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে।
জলমহাল ইজারাসংক্রান্ত কর্মকর্তাদের শাস্তির দৃষ্টান্ত নেই। ফলে নদীকে বদ্ধ জলমহাল নাম দিতে তাদের কোনো দুশ্চিন্তা করতে হয় না। এমনকি সেই জলমহালকে বদ্ধ জলাশয় দেখিয়ে তাঁরা বন্দোবস্ত দিয়ে যাচ্ছেন। না আপত্তি উঠছে সরকারের কোনো পর্যায় থেকে, না প্রশ্ন উঠছে দেশের সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে।
সারা দেশে নদীগুলোর সর্বনাশের প্রধানত এবং ক্ষেত্রবিশেষে একমাত্র দায় ভূমি কর্মকর্তাদের। কিন্তু তাঁরা যেহেতু সরকারের চালকের আসনে বসে থাকেন, তাই তাঁরা সব রকম জবাবদিহির বাইরে। যেসব জেলা-উপজেলায় ডিসি-ইউএনও কিংবা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন, তাঁরা যদি এ বছর নদী-উন্মুক্ত জলাশয় ইজারা দেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কি আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
যদি একবারও এই ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে বোধ করি কোনো কর্মকর্তা নদী বন্দোবস্ত দেওয়ার আগে বারবার ভাবতেন। অন্তর্বর্তী সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা কি নদীর সর্বনাশকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, নাকি তাঁরাও আগের পথেই হাঁটবেন?
● তুহিন ওয়াদুদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নদী সংগঠক