Homeদেশের গণমাধ্যমেবিএমডিএর ৩ প্রকৌশলীকে অবসর-বরখাস্তের আদেশ স্থগিত

বিএমডিএর ৩ প্রকৌশলীকে অবসর-বরখাস্তের আদেশ স্থগিত


বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এক প্রকৌশলীকে বাধ্যতামূলক অবসর ও দুই প্রকৌশলীকে  সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেছেন উচ্চ আদালত। একইসঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে গঠন করা একটি তদন্ত কমিটির কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে।  

গত বুধবার (৯ এপ্রিল) বিচারপতি রাজিক-আল-জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৫ মার্চ বিএমডিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খানকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম রেজা ও সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে ২৭ মার্চ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। উচ্চ আদালত এই বাধ্যতামূলক অবসর, সাময়িক বরখাস্ত ও তদন্ত কমিটি গঠন বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত করেছেন।

ঘটনার সূত্রপাত মূলত বিএমডিএর সদ্য সাবেক নির্বাহী পরিচালক (ইডি) শফিকুল ইসলামকে তার দপ্তর থেকে বের করে দেওয়াকে কেন্দ্র করে। 

আওয়ামী সরকারের আমলে গত বছরের ১৪ জুলাই ইডি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাকে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। কিন্তু, এক মাস ধরেও তিনি বিএমডিএ ছাড়ছিলেন না। এ সময়ের মধ্যে তিনি আওয়ামী লীগপন্থি কর্মকর্তাদের নানা সুবিধা দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ মার্চ একদল কর্মকর্তা-কর্মচারী গিয়ে তাকে দপ্তর ছাড়তে বাধ্য করেন। এরপর হেনস্থার অভিযোগে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন শফিকুল ইসলাম। পরে ১৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম উল্লেখ করে তিনি মামলাও করেন। মামলায় অজ্ঞাত অসাামি করা হয় আরো ৫০ থেকে ৬০ জনকে। কোনো তদন্ত ছাড়াই শফিকুল ইসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর দুই দিন পর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। ছয় সদস্যের এ কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের এক জন অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক ও উপ-সচিবকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল।

নথিপত্রে দেখা গেছে, তদন্ত কমিটি ৪১ জনকে সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। আগামী রোববার (১৩ এপ্রিল) তাদের সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। সাক্ষীদের তালিকায় ছিলেন আট জন ঠিকাদারও। এছাড়া, ঘটনার দিন ভারতে অবস্থান করা প্রকৌশলী, লালমনিরহাট ও নাটোরের প্রকৌশলী এবং আওয়ামীপন্থি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস সাত্তারসহ ওই সংগঠনের বেশকিছু সদস্যকে সাক্ষী করা হয়েছিল।

বিএমডিএর কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্ত কমিটি চলছিল ইডি শফিকুল ইসলামের কথায়। তাই, অনুগতদের সাক্ষী করা হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ কিংবা আওয়ামী কর্মচারী লীগের (রাজ-১৫০০) সক্রিয় সদস্য। এদের কেউ কেউ গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে লাঠি মিছিলে সরাসরি অংশ নেন। কেউ কেউ অর্থের যোগানদাতা হিসেবেও বিএমডিএতে পরিচিত।

সাবেক ইডি শফিকুল ইসলামের অনুগত বিএমডিএর এক নির্বাহী প্রকৌশলী ঘটনার দিন ছিলেন ভারতে, তাকেও সাক্ষী করা হয়। নাটোর ও লালমনিরহাটের প্রকৌশলী, যারা ঘটনার দিন রাজশাহীতেই ছিলেন না, তাদেরও সাক্ষী করা হয়। কাজ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কিছু ঠিকাদারকে সাক্ষ্য দিতে রাজি করানো হয়েছিল। 

বিএমডিএর ওই তিন প্রকৌশলীর আইনজীবি ফরিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, যেসব স্মারকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে বাধ্যতামূলক অবসর, দুই প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত ও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল; সেসব স্মারকের আদেশগুলো উচ্চ আদালত ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। পাশাপাশি, তদন্ত কমিটি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছিল, এটি উচ্চ আদালতকে জানানো হয়েছে। তাই, তদন্ত কমিটি গঠনের আদেশও স্থগিত করা হয়েছে।

বিএমডিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান বলেছেন, “আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছিল। উচ্চ আদালত ন্যায়বিচার করেছেন। এখন আমাদের অফিস করতে বাধা নেই। বুধবার হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার আমি অফিসও করেছি।”





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত