চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে গেলেও প্রথম দুই ম্যাচ হেরে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। হারটাও যেনতেন নয়। স্রেফ অসহায় আত্মসমর্পণ। গত দুই ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের যা অবস্থা, তাতে করে পাকিস্তানের বিপক্ষে বৃহস্পতিবারের ম্যাচে বাংলাদেশের জেতার আশা করাটা কষ্টকল্পনা। বাংলাদেশের মতো পাকিস্তানও একই বিন্দুতে। তারাও ভারত, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে ইতোমধ্যে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে। দুই দলই শেষ ম্যাচটিতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে মরিয়া। কিন্তু দুই দলের প্রতিপক্ষ হয়ে আছে বৃষ্টি। দুই দলের সেমিফাইনালের আশা শেষ হয়ে গেলেও সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে একটি পয়েন্ট জুটতে পারে! রাওয়ালপিন্ডিতে বিকাল ৩টায় ম্যাচটা সরাসরি সম্প্রচার করবে টি-স্পোর্টস।
এই মাঠেই মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। টসও হতে পারেনি। আজও সেখানে বিকালের দিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই বৃষ্টিতে যদি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় দলই জয়হীন থেকে আসর শেষ করবে।
আইসিসি ইভেন্টে বাংলাদেশ শেষ কয়েক বছরে অন্তত একটি জয় পেয়েছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে খেলেছে কোয়ার্টার ফাইনাল। ২০১৯ বিশ্বকাপে জয় পেয়েছিল তিনটি। ২০২৩ বিশ্বকাপে জয় একটি। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একটি জয়ের সঙ্গে একটিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। এবার কি জয় ছাড়াই মিশন শেষ করবে বাংলাদেশ? বাংলাদেশের লক্ষ্য যে করেই হোক পাকিস্তানকে হারানো। সেজন্য নিজেদের ভুলগুলো শুধরে মাঠ নামার কথা জানিয়েছেন সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘আমরা আগে কী করেছি তা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নই। আগামীকাল আমাদেরকে ভালো খেলতে হবে। যেটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
পাকিস্তানকে হারাতে হলে ব্যাটিংয়ে ভালো করতে হবে বলতে দ্বিধা করলেন না সালাউদ্দিন, ‘আমরা দুই ম্যাচেই ব্যাটিং ভালো করিনি। যা আমাদের জন্য উদ্বেগের জায়গা। প্রথম ম্যাচে আমাদের টপ অর্ডার ভালো করেনি। দ্বিতীয় ম্যাচে মিডল অর্ডার ভালো করেনি। আমাদেরকে অতি দ্রুতই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। উইকেট ভালো আছে। আমার মনে হচ্ছে, কাল ব্যাটসম্যানরা ভালো করবে। চিন্তার যত কারণ ব্যাটসম্যানদের নিয়েই। বোলাররা দুই ম্যাচেই ভালো করেছে। আশা করছি, তারা আগামীকালও ভালো করবে।’
ম্যাচ জয়ের জন্য দুই বিভাগকে সমানতালে জ্বলে উঠার কথা বললেন সালাউদ্দিন, ‘আপনি যদি জিততে চান দুই বিভাগে ভালো করতেই হবে। এখন পর্যন্ত আমাদের বোলিং বিভাগ ব্যাটসম্যানদের থেকে অনেক ভালো পারফর্ম করছে। আমি মনে করি আমাদের টপ এবং মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের নিয়মিত রান করতে হবে। দেখা যাচ্ছে, আমাদের টপ অর্ডার একদিন ভালো করছে, সেদিন মিডল অর্ডার খারাপ করছে। আবার মিডল অর্ডার ভালো করলে টপ অর্ডার খারাপ করছে। এজন্য দুই বিভাগের পারফরম্যান্সের মেলবন্ধন থাকতে হবে। তাহলেই এই উইকেটে ৩০০ রান করতে পারবো। যদি তা পারি তাহলে বোলার আটকে দিতে পারবে।’
এদিকে, ২৯ বছর পর কোনও আইসিসি ইভেন্ট আয়োজন করতে পারার আনন্দ মাটি হয়ে গেছে পাকিস্তানের। আজ গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে সেই ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দিতে মুখিয়ে পাকিস্তান। দলটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচ আকিভ জাবেদ বলেছেন, ‘ম্যাচটা অন্যান্য ম্যাচের মতো গুরুত্বপূর্ণ। জীবনে যখন আপনি হোঁচট খাবেন, তখন জানেন ঘুরে দাঁড়াতে কিছু একটা করতে হবে।’