৩. বিচারপতির নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েনমেন্টস কমিশন গঠন করার মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ এবং অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরি সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত করা। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের সরাসরি হস্তক্ষেপ কমবে বলে আশা করা যায়।
৪. আইনসভাকে আরও কার্যকর করতে এবং সরকারি দলের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণে ভারসাম্য আনতে আইনসভার উচ্চকক্ষ আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে গঠন করা। এর সুফল কী হবে?
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিএনপি ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রায় ৩৩ ও ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েও যথাক্রমে প্রায় ৫০ ও ৬০ শতাংশ আসন জিতেছিল। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ বা সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অর্থাৎ আপনি কোনো আসন জিততে ১০০ ভোটের মধ্যে ৫১ ভোট পেতে হবে না, ৩০ ভোট পেলেও জিতবেন যদি বাকি ভোটগুলো কয়েকজনের মধ্যে ভাগ হয়ে যায় (যেমন কেউ ২৮ ভোট, কেউ ২৭ ভোট, আবার কেউ ১৫ ভোট পেল)। এভাবে নিম্নকক্ষে আপনি ৩০ শতাংশ ভোট পেয়ে ৩০০ আসনের মধ্যে ২০০ আসন পেতে পারেন।
কিন্তু উচ্চকক্ষে যদি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা চালু হয়, তাহলে আপনি উচ্চকক্ষের ১০০টি আসনের মধ্যে আপনার ভোটের অনুপাতে ৩০টি আসন পাবেন। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে আইনসভায় ক্ষমতার একটি ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বর্তমানে ‘উইনার টেকস অল’ বা ‘জিরো সাম গেম’ যেটা আছে, সেটি আর থাকবে না। যদি উচ্চকক্ষকে যথাযথ ক্ষমতা দেওয়া হয়, যা সংস্কার কমিশনও প্রস্তাব করেছে, তাহলে সরকারকে জবাবদিহি করার ক্ষেত্রে আইনসভা আরেকটু কার্যকর হবে।