দেশ নাটকের ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকটি বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অভিনেতা, নির্দেশক ও থিয়েটারকর্মীরা। এ সময় এক সপ্তাহের মধ্যে শিল্পকলা একাডেমি থেকে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার করাসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
সোমবার (৪ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীগণ’ এর ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন অভিনেতা, নির্দেশক, থিয়েটারকর্মীরা। এ সময় তারা এসব কথা বলেন।
সমাবেশে দেশ নাটকের অধিকর্তা মাসুম রেজা, নির্দেশক আজাদ আবুল কালাম পাভেল, নির্দেশক সামিনা লুৎফা নিত্রা, শিক্ষক-নির্দেশক সাইদুর রহমান লিপন ও কামাল উদ্দিন কবির বক্তব্য রাখেন।
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সামনে ‘মব ভায়োলেন্সের’ হুমকি দিয়ে যারা নাটক প্রদর্শনী বন্ধ করতে বাধ্য করেছিলেন, সেই ‘ষড়যন্ত্রকারীরা’ দুর্বল নয় বলে মন্তব্য করেন নির্দেশক-অভিনেতারা।
নাটক বন্ধের ঘটনায় সংস্কৃতি অঙ্গণের অনেকে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ জামিল আহমেদকে দোষারোপ করছেন। এই প্রসঙ্গে মাসুম রেজা বলেন, ‘জামিল ভাই বলেছেন, খণ্ড যুদ্ধে হেরে গেছেন, বড় যুদ্ধে তাকে জিততে হবে। আমার প্রশ্ন, ক্ষুদ্র প্রতিপক্ষকে প্রতিহত করতে পারলেন না সে দিন, বড় যুদ্ধ জিতবেন কী করে? নাটক বন্ধের ঘটনায় সরকার ও শিল্পকলার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নাট্যকর্মীরা কীভাবে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেননি মহাপরিচালক।’
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানিয়ে মাসুম রেজা বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় যেন কোনও গাফিলতি না হয়। তদন্ত যেন নিরপেক্ষ হয়।’
নাট্যদল প্রাচ্যনাটের অধিকর্তা আজাদ আবুল কালাম বলেন, ‘শিল্পকলা একাডেমিতে গত ১ নভেম্বর যারা মব ভায়োলেন্স করে নাটক বন্ধ করতে এসেছিলেন তারা মোটেই দুর্বল নন। এদের পেছনেও একটি ষড়যন্ত্রকারী শক্তি রয়েছে। কারা সেই শক্তি আমরা জানি না। শিল্পকলা একাডেমিকে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। সে দিন যারা সন্ত্রাসের চূড়ান্ত রূপ দেখিয়েছেন, তাদের সবার বিরুদ্ধে শিল্পকলাকে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এ সময় সমাবেশ থেকে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন নির্দেশক মো. আলী হায়দার।
দাবিগুলো হলো
-সাত দিনের মধ্যে ‘নিত্যপুরাণ’ নাটকের প্রদর্শনীর আয়োজন।
-এক সপ্তাহের মধ্যে শিল্পকলা একাডেমি থেকে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার।
-নিয়ম কানুন তুলে দিয়ে সাধারণ নাট্যকর্মী, দর্শক, নাগরিকদের জন্য শিল্পকলা উন্মুক্ত করে দেওয়া।
-সব হল খুলে দিয়ে নাট্য চর্চার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়া, শিল্পকলা পরিষদের আমলানির্ভরতা কমানো। এবং
-শিল্পকলায় থিয়েটার দলগুলোর প্রদর্শনী বরাদ্দে স্বজনপ্রীতি বন্ধ করা।