অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুর ইমামতিতে প্রাপ্তবয়স্কদের নামাজ শুদ্ধ হয় না। নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী এ বিধানটি যেমন ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তারাবিহর মতো নফল নামাজের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই তারাবিহ নামাজের ইমামতির দায়িত্ব অপ্রাপ্তবয়স্ক কাউকে দেওয়া যাবে না, প্রাপ্তবয়স্ক কাউকে দিতে হবে।
হজরত আতা ও ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) থেকে বর্ণিত তারা বলেন,
لاَ يَؤُمُّ الْغُلاَمُ قَبْلَ أَنْ يَحْتَلِمَ فِي الْفَرِيضَةِ وَلاَ غَيْرِهَا.
নাবালেগ বাচ্চা ফরজ-নফল কোনো নামাজেই ইমামতি করবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৩৫২৪)
যে শিশুরা কোরআন হিফজ করেন, অনেক সময় শিক্ষকরা তাদেরকে দিয়ে তারাবিহ নামাজের ইমামতি করাতে চান, যেন তারা তারাবিহ নামাজের ইমামতিতে অভ্যস্ত হতে পারে। এ রকম ক্ষেত্রে অপ্রাপ্তবয়স্ক কোনো হাফেজের ইমামতিতে যে তারাবিহ নামাজের জামাত হবে, সেখানে শুধু অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদেরই রাখতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষক ও ছাত্ররা পৃথকভাবে তারাবিহ আদায় করবেন।
রমজানে তারাবিহ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমজানের রাতে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (সহিহ বুখারি: ৩৭ সহিহ মুসলিম: ৭৫৯)
আজ রমজানপূর্ব মাস শাবানের দশ তারিখ। অর্থাৎ ফজিলতপূর্ণ মাস রমজান শুরু হতে আর মাত্র বিশ দিন বাকি আছে। তাই রমজানের ইবাদতের জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা উচিত। আল্লাহর রাসুল (সা.) শাবান মাস থেকেই রমজানের জন্য প্রস্তুত হতেন। তিনি শাবান মাসে অন্য মাসগুলোর তুলনায় বেশি রোজা রাখতেন, বেশি নফল ইবাদত করতেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে আবি কায়স (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছে অন্যান্য মাসের তুলনায় শাবান মাসে নফল রোজা রাখা বেশি পছন্দনীয় ছিল। (সুনানে আবু দাউদ: ২১০১) আয়েশা (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে প্রতিদিন রোজা রাখতে দেখিনি এবং শাবান মাসের চেয়ে বেশি নফল রোজা আর কোনো মাসে রাখতে দেখিনি। (সহিহ বুখারি: ১৯৬৯)
আমাদেরও কর্তব্য রমজান আসার আগেই রোজা ও ইবাদতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। বেশি বেশি নামাজ পড়া, নফল রোজা রাখা, রমজানের রোজা, তারাবিহ ও অন্যান্য ইবাদতের জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত হওয়া এবং এসব ইবাদতের পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করা ইত্যাদি।
ওএফএফ/জিকেএস