খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে এ মামলা করা হয়। কুয়েটের তথ্য ও প্রকাশনা দফতরের জনসংযোগ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘মামলায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।’
এদিন রাতে শাহেদুজ্জামান শেখ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদের দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর বেলা দেড়টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ঘটনার বিচারের জন্য চারটি দাবি জানানো হয়। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সহযোগিতা এবং যেকোনো অন্যায়ের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দেন। কোনও কালক্ষেপণ না করে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে উপাচার্য দ্রুত সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। এ ছাড়া ছাত্রদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য উপাচার্য ডিন, ইনস্টিটিউট পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় প্রধান, সব পরিচালক, প্রভোস্টদের নিয়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় একটি সভা আহ্বান করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উপস্থিত হওয়ার আগেই বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে উপাচার্য, সহ-উপাচার্যসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক ঘটনাস্থলে যান এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিবৃত্তের চেষ্টা করেন। এ সময়ে কয়েকজন শিক্ষক, ভাইস চ্যান্সেলর, অনেক শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীও আহত হয়ে কুয়েট মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি হন। এ সময় উপাচার্য শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলেও শিক্ষার্থীদের সব দাবি দ্রুত পূরণের আশ্বাস দেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, আর যাতে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সার্বিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ঘটনার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৮তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এ ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৩তম সিন্ডিকেট সভায় রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধের আদেশটি বহাল রাখা ও শিক্ষার্থীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধের যে ঘোষণা করা হয়েছিল তা কঠোরভাবে অনুসরণ করাসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়।