Homeজাতীয়সম্পর্ক স্বাভাবিক চায় ঢাকা-ইসলামাবাদ

সম্পর্ক স্বাভাবিক চায় ঢাকা-ইসলামাবাদ


প্রায় দেড় দশকের অচলাবস্থা কাটিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চায়। সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালোচ। আর এ মাসের শেষ দিকে আসতে পারেন দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার।

কূটনৈতিক সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক হবে। প্রায় ১৫ বছর বিরতিতে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ২২ এপ্রিল। তবে এটি কিছুটা পেছাচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দুই দেশের শেষ বৈঠকটি হয় প্রায় ১০ বছর আগে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘উনি (ইসহাক) যে আসবেন এটা চূড়ান্ত হয়েছে। এ মাসের শেষের দিকে হবে।’ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের সব দিক নিয়েই দুই বৈঠকে কথাবার্তা হবে, এমনটি জানান উপদেষ্টা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

কূটনীতিকেরা বলছেন, শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরের শাসনামলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নামমাত্র যোগাযোগে নেমে গিয়েছিল। কোনো রকমে দুই দেশে মিশনগুলো চালু রাখার বাইরে আসা-যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। দুই দেশই ভিসায় কড়াকড়ি আরোপ করে। যাত্রীর অভাবে লোকসান গুনতে হওয়ায় ঢাকা ও করাচির মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ করে দেয় পাকিস্তানি এয়ারলাইনস। এতে বেসরকারি পর্যায়েও যাওয়া-আসা অনেক কমে যায়।

কূটনীতিকেরা মনে করছেন, অনেক দিন পর উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কারণে দুপক্ষই সম্পর্ক অন্তত স্বাভাবিক করার ওপর জোর দিতে পারে। সরাসরি ফ্লাইট চালু করার বিষয়টি সামনে আসবে।

স্থানীয় বিশ্লেষকেরা মনে করেন, পাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে দ্রুত গতি আনতে চাইবে। অনেক কিছু করতে চাইবে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারকে মনে রাখতে হবে, এখন পরিস্থিতি নাজুক। ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপোড়েনের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অস্থিরতা রয়েছে। আর দুই দেশেরই প্রতিবেশী ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনদিকে এগোয়, কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তার ওপর নজর রাখবে। এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না, যাতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ‘রেডলাইন’ অতিক্রম করে যায়। ভারতের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি হয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে এবার কোনো চুক্তি সই হবে কি না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত মঙ্গলবার বলেন, চুক্তির বিষয়গুলো সাধারণত সফরের দু-এক দিন আগে চূড়ান্ত হয়। এখনো অনেক দেরি আছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন গতি সঞ্চার হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট এম হুমায়ুন কবির আজকের পত্রিকাকে গতকাল বলেন, দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করা একটি ব্যাপার। আর জাতীয় স্বার্থ ও আঞ্চলিক বিষয়াবলি বিবেচনায় রেখে যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকু এগোনো ভালো।

হুমায়ুন কবির আরও বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা করার পাশাপাশি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্ক সক্রিয় করা যায় কি না, সরকার তাও খতিয়ে দেখতে পারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি গত ১৫ বছরে বেশ সীমিত হয়ে পড়ে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে।

২০২৩-২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে রপ্তানি ছিল মাত্র ৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। আর পাকিস্তান থেকে আমদানি ছিল ৬ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত