বিবাহ বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক সমাজের জন্য এক ভয়াবহ ব্যাধি, যা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলে। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি জঘন্যতম অপরাধগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা মানুষের চরিত্র নষ্ট করে, পারিবারিক বন্ধন দুর্বল করে এবং দুনিয়া ও আখিরাতে কঠিন শাস্তির কারণ হয়।
পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, “আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ।” (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩২)।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ঈমানের পরিপন্থী
নবী মুহাম্মাদ (সা.) এই কাজকে ঈমানের বিপরীত বলে উল্লেখ করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “ব্যভিচারী ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত থাকাবস্থায় মুমিন থাকে না…” (মুসলিম, হাদিস : ১০৬)।
ইসলামি গবেষকদের মতে, এই পাপে লিপ্ত ব্যক্তিরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয় এবং মৃত্যুর সময় কঠিন পরিণতির মুখে পড়ে। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, এটি আল্লাহর সবচেয়ে অপছন্দনীয় কাজগুলোর একটি।
সমাজের ওপর ভয়াবহ প্রভাব
ইসলামি গবেষকদের মতে, সমাজে যখন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বেড়ে যায়, তখন তা সামাজিক অবক্ষয়ের পাশাপাশি আসমানি শাস্তির কারণ হতে পারে।
হাদিসে বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) সতর্ক করে বলেছেন, “এই উম্মতের শেষ পর্যায়ে ভূমিধস, শারীরিক অবয়ব বিকৃতি ও পাথর বর্ষণের শাস্তি আসবে। যখন সমাজে ঘৃণ্য পাপাচার ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়বে, তখন এসব শাস্তি নেমে আসবে।” (তিরমিজি, হাদিস : ২১৮৫)।
সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান
ইসলামি চিন্তাবিদরা মনে করেন, এই অনৈতিক সম্পর্ক প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় করার মাধ্যমে এই প্রবণতা রোধ করা সম্ভব।
ইসলামি গবেষকরা সবাইকে এ ধরনের পাপ থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সমাজের অন্যান্য সদস্যদেরও সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছেন, যেন এ ধরনের কাজের ফলে গোটা সমাজের ওপর কোনো শাস্তি না আসে।
মহান আল্লাহ সবাইকে সঠিক পথে থাকার তাওফিক দান করুন—এমনটাই প্রার্থনা ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের।
মো. মহিউদ্দিন