Homeজাতীয়শেখ হাসিনাকে ফেরাতে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু

শেখ হাসিনাকে ফেরাতে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু


দেশে এনে বিচার করার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাল অন্তর্বর্তী সরকার। পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টা সরকারের এ পদক্ষেপের কথা গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। বাংলাদেশের তরফ থেকে এ বিষয়ে কূটনৈতিক পত্র পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচারব্যবস্থার জন্য তাঁকে ফেরত চাওয়া হচ্ছে, এটা পরিষ্কারভাবে ভারতকে জানানো হয়েছে।’ একটি কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে ভারতকে এই অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। কূটনৈতিক পত্রটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ না করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশের পাঠানো একটি কূটনৈতিক পত্র পাওয়ার কথা স্বীকারও করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গতকাল নয়াদিল্লিতে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

এর আগে গতকাল সকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে একটি চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘পদত্যাগ করে’ গত ৫ আগস্ট ভারতে চলে যান। একটি উড়োজাহাজে একমাত্র ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ঢাকা থেকে দিল্লি যান তিনি।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গত পাঁচ মাসে গণহত্যা, খুন, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় ২৫০টি মামলা করা হয়েছে।

আইনিপ্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি একটি চুক্তি সই হয়। এই চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে ভারতকে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে করা একটি মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ভারত থেকে তাঁকে ফেরত আনতে ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম পুলিশ অধিদপ্তরকে এক চিঠিতে অনুরোধ করেন। পুলিশ অধিদপ্তর এই অনুরোধের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়।

ভারতের সঙ্গে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রত্যর্পণের বিষয় দেখভাল করে থাকে। তবে এ-সম্পর্কিত যোগাযোগ হয়ে থাকে কূটনৈতিক চ্যানেলে।

রাজনৈতিক বিবেচনার সুযোগ

চুক্তির ষষ্ঠ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাজনৈতিক বিবেচনায় করা মামলায় অভিযুক্ত অথবা সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ নাকচ করার সুযোগ রয়েছে।

তবে একই ধারায় বলা হয়েছে, খুন, অপহরণ, গুম, খুনের জন্য ইন্ধন দেওয়া, বেআইনি আটক এবং এসব অপরাধের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে করা মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় করা হয়েছে বলে বিবেচিত হবে না।

অষ্টম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো রাষ্ট্র প্রত্যর্পণের অনুরোধ নাকচ করতে পারে, যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি সেই রাষ্ট্রকে বোঝাতে সক্ষম হন, তাঁকে ফেরত দেওয়া অন্যায় হবে; কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে মামলায় যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্যে করা হয়নি।

চুক্তি অনুযায়ী, কোনো রাষ্ট্র অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণে সম্মত হলে ফেরত দেওয়ার জন্য অনুরোধকারী রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট করে দেওয়া স্থানে তাঁকে হস্তান্তর করতে হবে।

তবে অনুরোধকারী রাষ্ট্র সম্মতি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ওই ব্যক্তিকে গ্রহণ না করলে প্রত্যর্পণের সম্মতি বাতিল করা হতে পারে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত