মনিরা শারমিন, যুগ্ন আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি, ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিদের প্রতি সমাজ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বহীনতা ও পক্ষপাতিত্বের বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিকে প্রায়শই আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে আরেকবার মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হতে হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তাদের পক্ষপাতিত্ব, ঘুষ বা আর্থিক লেনদেনের মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে অনেক সময় ভুক্তভোগীরা সঠিক বিচার থেকে বঞ্চিত হন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যে, নারীদের জন্য জবাবদিহিতার সঠিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে কিনা।
মনিরা শারমিন আরও বলেন, ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিকে থানায় মামলা করতে গিয়ে যে ধরনের প্রশ্ন ও পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, তা অনেক সময় ভুক্তভোগীর জন্য মানসিকভাবে পুনরায় আঘাতস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায়। তিনি এটিকে “ওরাল রেপ” বা মৌখিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার সাথে তুলনা করেন, যেখানে ভুক্তভোগীকে বারবার সেই ঘটনার বর্ণনা করতে হয় এবং মানসিকভাবে পুনরায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। তিনি এই প্রক্রিয়াকে আরও সংবেদনশীল ও সুসংগঠিত করার আহ্বান জানান, যাতে ভুক্তভোগীকে বারবার আঘাতপ্রাপ্ত না হতে হয়।
সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির বিষয়ে তিনি বলেন, এই নীতি ঘোষণার পরেও ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকারিতা ও সরকারের সক্ষমতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সামনে এই নীতির ইতিবাচক ফলাফল দেখা যাবে।
এছাড়াও, তিনি গণমাধ্যমের ভূমিকার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, ধর্ষণের মতো ঘটনার পর গণমাধ্যমের দায়িত্ব শুধু সংবাদ প্রকাশ করাই নয়, বরং বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা এবং বিচারের ফলাফল জনগণের সামনে বারবার তুলে ধরা। তিনি মনে করেন, গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে পারে।
মনিরা শারমিনের মতে, ধর্ষণ কোনো সাধারণ অপরাধ নয়, এটি একটি বিকৃত মানসিকতার প্রকাশ। তিনি দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া ও কঠোর শাস্তির মাধ্যমে এই ধরনের অপরাধ রোধের আহ্বান জানান। তিনি নারীদের সুরক্ষা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সমাজের সকল স্তরে জবাবদিহিতা ও সচেতনতা বাড়ানোর উপর জোর দেন।