প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোর উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে গ্রহণ করছে। এরমধ্যে ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার ঢালচরে লঞ্চঘাট স্থাপন করা হয়েছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে জোরদার করার জন্য ভোলা জেলায় একটি রফতানি প্রক্রিয়া জোন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার ঢালচরে জেলেদের সঙ্গে জেলে নিবন্ধন হালনাগাদ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বরিশালের হিজলাতে ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত জাতীয় বীর শহিদ রিয়াজের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে তার নামে একটি লঞ্চঘাটের পন্টুন উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়া এ অঞ্চলের জেলেদের সুবিধার্থে মাছঘাট নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান আছে।
তিনি বলেন, হাতিয়াসহ বিভিন্ন বিচ্ছিন্ন দ্বীপে মূল ভূ-খণ্ডের সঙ্গে সরাসরি ফেরি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মনপুরায় চরবাসীদের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য রাস্তা নির্মাণ ও সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েল স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। এসব উদ্যোগ নৌপরবিহণ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এবং মৎস্য এবং প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বর্তমান সরকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং দ্বীপাঞ্চলবাসীদের টেকসই উন্নয়নে বদ্ধপরিকর।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার নৌপরিবহণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, মৎস্যজীবীদের তালিকায় অনেক অমৎস্যজীবী অন্তর্ভুক্ত হয়েছে— এটা অন্যায়। তাই তালিকা এমনভাবে হালনাগাদ করা হবে যেন অন্যায়ভাবে কেউ তালিকায় প্রবেশ করতে না পারে।
নারী মৎস্যজীবীদের তালিকায় অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারী জেলেরা যেন দৃশ্যমান হয় তাদের যেন তালিকায় নাম থাকে এবং একই পরিবারে পুরুষ জেলে থাকলেও নারীদের অগ্রাধিকার দিতে চাই। কোনও অমৎস্যজীবী তালিকায় প্রবেশ করতে না পারে তা কঠোরভাবে দেখা হবে।
নৌপরিবহণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঢালচরের মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে এখানে ঘাট তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে এ অঞ্চলের মানুষ বিশেষ করে মৎস্যজীবীরা অনেক উপকৃত হবেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারণা, প্রত্যন্ত এলাকার উন্নয়ন। ঢাকায় বসে উন্নয়নের কথা বললে হবে না। যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যাবে তখনই হবে টেকসই উন্নয়ন।
পরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এবং নৌপরিবহণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা মনপুরার বিভিন্ন চরাঞ্চলের নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে নিবন্ধিত কার্ড বিতরণ করেন।
মনপুরা উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য দফতর আয়োজনে মনপুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিখন বনিকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) সুরাইয়া আখতার জাহান, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা, মনপুরা উপজেলার মৎস্যজীবী ও মৎস্যজীবী প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।