দেশে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে না হয়, বারবার যাতে একই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে, সে উদ্দেশ্যেই পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়েছিল। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে জারি করা রুলের শুনানিতে বুধবার এমন কথা বলেন আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া।
তিনি শুনানিতে বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী একটি মোটিভেটেড অ্যামেন্ডমেন্ট। তাই পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরোটা বাতিল চান তিনি।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি হয়। একপর্যায়ে বিএনপির পক্ষে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘এ মামলায় আমরা ভিন্ন ভিন্নভাবে যুক্ত হলেও এতে কোনো পক্ষ-বিপক্ষের বিষয় নেই। এটি পুরো দেশবাসীর মামলা। এখানে ডান-বাঁয়ের প্রশ্ন নেই।’ এ সময় হাইকোর্ট বলেন, ‘হ্যাঁ, এতে পুরো বাংলাদেশের জনগণ পক্ষ। পরে আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।’
এর আগে পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তির করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৯ আগস্ট রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় করা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিটটি করেন। বাকিরা হলেন ড. তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জুবিরুল হক ভূইয়া ও জারাহ রহমান।
ওই রুলে আদালতকে সহায়তা করতে (ইন্টারভেনার হিসেবে) গত ২২ অক্টোবর জামায়াতের পক্ষে যুক্ত হন দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। আর ২৯ অক্টোবর বিএনপির পক্ষে যুক্ত হন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ কয়েকটি বিষয়ে ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়। ওই সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘জাতির জনক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ও সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০টি করা হয়।
সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয় ওই সংশোধনীর মাধ্যমে।