চলতি বিপিএলে টানা আট ম্যাচ জিতে সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করে রংপুর রাইডার্স। দেখে মনে হচ্ছিল শিরোপা নুরুল হাসান সোহানের দলের হাতে ওঠা সময়ের ব্যাপার। তবে এরপরই দলটির যে ছন্দপতন শুরু হয় তা আর থামেনি। তাইতো টানা ৪ ম্যাচ হারার পর শক্তি বাড়াতে দলে নিয়েছিল টি-টোয়েন্টির দুই বিধ্বংসী ক্রিকেটার আন্দ্রে রাসেল ও টিম ডেভিডকে। তবে তাদের নিয়েও ভাগ্য পরিবর্তন হলো না, বাঁচা-মরার এলিমিনেটর ম্যাচে মাত্র ৮৫ রানে অলআাউট হয়ে লজ্জার রেকর্ড গড়ল রংপুর।
সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) এলিমিনেটর ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে রীতিমতো চোখে শর্ষে ফুল দেখেছে রংপুরের ব্যাটাররা। ০ রানে সৌম্যর রান আউট দিয়ে শুরু এরপর মেহেদী মিরাজ ও নাসুমের ঘূর্ণিতে রংপুরের ব্যাটারদের খালি আসা-যাওয়ার মিছিল হয়েছে। একসময় মনে হচ্ছিল বিপিএল ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোরের লজ্জা নিজেদের করে নিচ্ছে রংপুর। তবে শেষ ব্যাটার আকিব জাভেদের কারণে সে লজ্জা থেকে রেহাই পেয়েছে তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৬.৫ ওভারে মাত্র ৮৫ রানে গুটিয়ে যায় তারা।
প্রথম বল থেকেই শুরু হয় বিপর্যয়! ওপেনার সৌম্য সরকার রানের খাতা খুলতেই পারেননি, রান আউট হয়ে ফেরেন শূন্য রানে। এরপর একে একে বিদায় নেন জেমস ভিন্স (১), মাহেদি হাসান (১), সাইফ হাসান (৪), মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (৮)। প্রথম ছয় ওভারে মাত্র ১৯ রানেই ৫ উইকেট হারায় রংপুর!
কাপ্তান নুরুল হাসান কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন, ২৩ রানের ইনিংস খেলেন ২৫ বলে। কিন্তু তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। দলে নামীদামি তারকা থাকা সত্ত্বেও ব্যর্থ হন আন্দ্রে রাসেল (৪), টিম ডেভিড (৭) ও রাকিবুল হাসান (১)।
শেষদিকে একাই রংপুরের রান কিছুটা বাড়ানোর চেষ্টা করেন আকিফ জাভেদ। ১৮ বলে ৩২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে কিছুটা মান বাঁচান তিনি। তবে বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় মাত্র ৮৫ রানে অলআউট হয় রংপুর।
খুলনা টাইগার্সের বোলাররা শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন। স্পিনারদের দাপটে ধসে পড়ে রংপুরের ব্যাটিং লাইনআপ। মেহেদী হাসান মিরাজ ছিলেন বিধ্বংসী, ৪ ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। নাসুম আহমেদও সমান ৩ উইকেট নেন, ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে। মোহাম্মদ নওয়াজ ও হাসান মাহমুদ ১টি করে উইকেট নেন। মুশফিক হাসান মাত্র ৫ বল করেই ১ উইকেট শিকার করেন।
রংপুরের ইনিংসের ৫০ রান পেরোতেই লেগে যায় ১১.৩ ওভার, এরপর বাকি ৩৫ রান তুলতেই শেষ হয়ে যায় পুরো দল!
মাত্র ৮৫ রানের সংগ্রহ খুলনার ব্যাটারদের জন্য বেশ সহজ লক্ষ্য। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বড় ব্যাটিং বিপর্যয় রংপুরের প্লে-অফের স্বপ্নেই কালো মেঘ ডেকে আনবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়