১০ জনের দল, প্রতিপক্ষের চাপ, আর সময় ফুরিয়ে আসছে- ঠিক তখনই লিওনেল মেসির জাদু। শেষ মুহূর্তে তার অবিশ্বাস্য অ্যাসিস্ট থেকে তেলাস্কো সেগোভিয়া গোল করলে নিউইয়র্ক সিটি এফসির বিপক্ষে ২-২ গোলের নাটকীয় ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইন্টার মায়ামি। এমএলএসের উদ্বোধনী ম্যাচে যেন সিনেমার চেয়ে কম কিছু হয়নি!
শুরুটা স্বপ্নের মতো হয়েছিল মায়ামির। মাত্র পাঁচ মিনিটেই মেসির নিখুঁত ক্রস থেকে গোল করেন টমাস অ্যাভিলেস। কিন্তু সেই আনন্দ ক্ষণস্থায়ী হয়।
মাত্র দুই মিনিট পরই মায়ামির উইঙ্গার ফাফা পিকল্ট চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। এরপর ২৩ মিনিটে পুরো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক মুহূর্ত আসে- অ্যাভিলেস প্রতিপক্ষের আলোনসো মার্টিনেজকে ফাউল করলে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন। সেই ফাউলের পর পাওয়া ফ্রি-কিক থেকে নিউইয়র্কের মিতজা ইলেনিচ গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান।
বিরতির পর ৫৫ মিনিটে জর্ডি আলবার বড় এক ভুলের খেসারত দিতে হয় মায়ামিকে। ডিফেন্ডার হিসেবে বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি, আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আলোনসো মার্টিনেজ জোরালো শটে বল জালে পাঠিয়ে নিউইয়র্ককে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন।
এরপর ১০ জনের ইন্টার মায়ামি ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও সুযোগ হাতছাড়া হয় একের পর এক। নির্ধারিত সময় শেষে অতিরিক্ত ১১ মিনিট যোগ করা হয়, আর সেখানেই শুরু হয় মেসির রূপকথা।
নাটকীয়তার জন্য যেন অপেক্ষা করছিলেন মেসি। ম্যাচের ১০০তম মিনিটে ডিফেন্ডার ইয়ান ফ্রেই ড্রিবল করে বল এগিয়ে নেন এবং মেসিকে পাস দেন। এরপর যা হলো, তা শুধু মেসির পক্ষেই সম্ভব! আর্জেন্টাইন তারকা অসাধারণ ভিশন দেখিয়ে তেলাস্কো সেগোভিয়াকে বল বাড়ান, আর তার লুপ শট নিউইয়র্ক গোলরক্ষক ম্যাট ফ্রিজকে পরাস্ত করে জালে জড়ায়।
শেষ বাঁশি বাজতেই যেন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে মায়ামি শিবির। হারতে বসা ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়ে মেসি প্রমাণ করলেন, কেন তিনি ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা। নতুন মৌসুমে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই দলকে এমন নাটকীয়ভাবে বাঁচানো- এটাই হয়তো মেসির আরেকটি স্বাক্ষর, যে তিনি শুধু ফুটবলার নন, একজন নেতা।