ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের উজ্জ্বলতম তারকা নেইমার জুনিয়র যখন সান্তোসে ফেরার ঘোষণা দিলেন, তখনই গুঞ্জন উঠেছিল—এটা কি শুধুই ক্লাব ফুটবলে ফেরার গল্প, নাকি জাতীয় দলে ফেরারও ইঙ্গিত? এবার সে প্রশ্নের জবাব নিজেই দিলেন নেইমার। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে আবারও লড়তে চান!
সান্তোসে ফেরার পর এক সাক্ষাৎকারে নেইমার বলেন, ‘অবশ্যই আমি জাতীয় দলে ফিরতে চাই। আমার এখনো কিছু জেতার বাকি আছে—২০২৬ বিশ্বকাপ। এটা সম্ভবত আমার শেষ মিশন, তাই আমি সেটাকে জয় করতে চাই।‘
নেইমারের এই ঘোষণা স্বপ্ন দেখাচ্ছে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের। ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগোদের মতো তরুণ তারকাদের সঙ্গে মিলে নেইমার কি পারবে ব্রাজিলকে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ এনে দিতে? নাকি এটি হতে যাচ্ছে তার ক্যারিয়ারের শেষ অপূর্ণ স্বপ্ন?
বিশ্বকাপে নেইমারের উত্থান-পতনের গল্প
২০১৪: স্বপ্নভঙ্গের শুরু
নিজ দেশে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে উড়ন্ত ফর্মে ছিলেন নেইমার। গ্রুপ পর্বে চার গোল, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে গুরুতর ইনজুরিতে পড়ে টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যায় তার। এরপর সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলের লজ্জাজনক পরাজয়—যা আজও দুঃস্বপ্ন ব্রাজিলিয়ানদের জন্য।
২০১৮: নাটকের বেশি, নায়কোচিত কম
রাশিয়া বিশ্বকাপে ইনজুরি কাটিয়ে ফিরলেও নেইমারের পারফরম্যান্সের চেয়ে বেশি আলোচিত ছিল তার অতিরিক্ত ‘নাটকীয়’ ফাউল এবং রোলিং! যদিও তিনি দুটি গোল করেছিলেন, তবে বেলজিয়ামের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ২-১ গোলে হার মানতে হয় ব্রাজিলকে। নেইমারের নেতৃত্ব নিয়ে তখন থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
২০২২: ইতিহাস গড়েও ব্যর্থতার গল্প
কাতার বিশ্বকাপে ছিলেন ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় ভরসা। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে অসাধারণ এক গোল করে পেলের রেকর্ড স্পর্শ করেন তিনি। কিন্তু টাইব্রেকারে ব্রাজিলের হৃদয়ভাঙা বিদায়, আর নেইমারের অশ্রুসিক্ত প্রস্থান—সব মিলিয়ে আরেকটি হতাশার বিশ্বকাপ।
২০২৬: শেষ সুযোগ?
নেইমারের সান্তোসে ফেরা কেবল ঘরোয়া ফুটবলে সীমাবদ্ধ থাকবে না বলেই মনে করছেন অনেকে। ফর্ম ও ইনজুরি সামলে জাতীয় দলে জায়গা পাকা করতে পারলে, ২০২৬ বিশ্বকাপই হতে পারে নেইমারের ‘লাস্ট ডান্স’।