প্রতিবছর রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এই বছরও এর কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। বিশেষ করে, লেবু, বেগুন, শসা, কাঁচা মরিচ ও আলুর দাম বেড়েছে, তবে তা অতিরিক্ত নয়। চট্টগ্রামের বাজারে নিত্যপণ্যের দাম এখনো কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও লেবুর দাম অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় রোজাদারদের জন্য একধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী, রেয়াজউদ্দিন, ঝাউতলা, চকবাজার ও কাজীর দেউড়িসহ বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করে জানা গেছে, বেগুনের দাম সাধারণ অবস্থায় রয়েছে। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি নয়। তবে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; যা কয়েক দিন আগে ২৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে ছিল। অন্যান্য সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি শসা ও ক্ষীরার দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে, যা এক সপ্তাহ আগে ১০-২০ টাকা কম ছিল। আলুর দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা দুই সপ্তাহ আগে ১০০ টাকায় পাঁচ কেজি পাওয়া যেত।
তবে সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হচ্ছে, লেবুর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। প্রতি হালি লেবু এখন ৮০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং ডজনের দাম ২৬০ থেকে ২৮৫ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। বাজারে লেবুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে রবি মৌসুমে সবজি উৎপাদনে ভালো ফলন হয়েছে, বিশেষ করে, ক্ষীরা, বেগুন ও টমেটোর ফলন বেশি হয়েছে। তবে বাজারে লেবুর দাম বাড়ানোর জন্য কোনো একক কারণ পাওয়া যায়নি।
এদিকে খুলনা জেলার বাজারে বোতলজাত ভোজ্যতেলের সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। রোজার শুরুতে ব্যবসায়ীরা তেলের দাম ১০-১৫ টাকা বেশি নিয়ে অভিযোগ করেছেন। ১ লিটার বোতলের গায়ে ১৭৫ টাকা দাম থাকলেও তা ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২ ও ৫ লিটারের বোতল অনেক দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না এবং তেলের সংকট আরও বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ডিলাররা তাঁদের বাধ্য করছে লবণ ও আটা কিনতে, যার ফলে তাঁদের খরচ বেড়ে যাওয়ায় তেলের দাম বাড়ানোর জন্য বাধ্য হচ্ছেন।
খুলনা জেলা প্রশাসন বাজার মনিটরিং করলেও তেলের দাম বাড়ানোর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসন বাজারের দামে নিয়ন্ত্রণ রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাঁরা আরও দাবি করেছেন, রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
এভাবে রমজানে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে, লেবু ও বোতলজাত তেলের দাম বাড়ার ফলে রোজাদারদের একধরনের চাপ অনুভূত হচ্ছে। তবে কিছু পণ্যের দাম সাধারণত স্বাভাবিক রয়েছে, যা ক্রেতাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি এনেছে।