জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আগামী অর্থবছর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর আয়কে করের আওতায় আনার পরিকল্পনা করছে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং বিচারকদের জন্য বিদ্যমান কিছু কর-ছাড় সুবিধা বাতিল করার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে। এনবিআরের একটি বিশেষ টাস্কফোর্সের সুপারিশের ভিত্তিতে এই পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল সূত্র।
রাজনৈতিক দলগুলোর অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর আয় ও ব্যয়ের হিসাব দীর্ঘদিন ধরেই অস্পষ্ট। দলগুলোর বার্ষিক অডিট রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলেও বাস্তব আয়ের তুলনায় তা অনেক কম দেখানো হয়।
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর আয়ের ওপর কর বসানো যৌক্তিক হবে। তাদের আয়-ব্যয়ের প্রকৃত তথ্য সামনে আনা দরকার।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৫০টির বেশি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। সম্প্রতি নতুন দলগুলো বড় পরিসরে ইফতার মাহফিলসহ নানা ব্যয়বহুল কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা তাদের অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আয়কর ছাড় কমছে প্রধানমন্ত্রীরও
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বেসিক বেতন ও সম্মানী ব্যতীত অন্যান্য ভাতা করমুক্ত। তবে সাধারণ নাগরিক এবং বেসরকারি চাকরিজীবীদের উৎসভেদে সব ধরনের আয়ের ওপর কর দিতে হয়। এনবিআরের টাস্কফোর্স সুপারিশ করেছে, মন্ত্রী-এমপিদের উৎসব ভাতা এবং অন্যান্য ভাতার ওপর কর আরোপ করা উচিত, যাতে কর সমতা নিশ্চিত হয়।
এনবিআরের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর করমুক্ত আয় বিভিন্ন সময়ে অর্থপাচার ও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ তৈরি করেছে। তাই দলগুলোর আয়কর আওতায় এলে আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।
এই পরিবর্তনগুলো আগামী জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং অর্থ উপদেষ্টা।