বাংলাদেশি রফতানি পণ্যের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রতি বছর এক বিলিয়ন ডলারের বেশি শুল্ক আদায় করে থাকে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে বাংলাদেশ সরকারের শুল্ক আদায় মাত্র ১৮০ মিলিয়ন ডলার। এমন তথ্য উঠে এসেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক বিশ্লেষণে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে আয়োজিত ‘ট্রাম্প রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যান্ড বাংলাদেশ: ইমপ্লিকেশনস অ্যান্ড রেসপন্স’ শীর্ষক সংলাপে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য থেকে বছরে এক বিলিয়নের বেশি শুল্ক আদায় করে থাকে। অথচ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে যে শুল্ক আরোপ করে, তার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম।’
সিপিডির উপস্থাপনায় জানানো হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর গড়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও বিভিন্ন বাণিজ্যিক সুবিধা বিবেচনায় সেটি কার্যত নেমে আসে ২ দশমিক ২ শতাংশে। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যে গড়ে ১৫ দশমিক ১ শতাংশ শুল্ক নেয়।
এ প্রেক্ষাপটে সিপিডি বাংলাদেশের জন্য কিছু কৌশলগত পরামর্শ তুলে ধরে। এর মধ্যে রয়েছে— রফতানি প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির প্রভাব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ, বিশেষ করে ভিয়েতনামসহ অন্যান্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান মূল্যায়ন।
সংলাপে আরও উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম অ্যাগ্রিমেন্টের (টিকফা) আওতায় কৌশলগত আলোচনা জোরদার করা প্রয়োজন। পাশাপাশি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
সিপিডি মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রকে নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হলে সেটি মোস্ট ফেভারড নেশন নীতির আওতায় অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের একই সুবিধা দিতে বাধ্য করবে। তাই এ বিষয়ে সতর্কতা এবং কৌশলগত মূল্যায়ন জরুরি।
এছাড়া মার্কিন তুলা আমদানির জন্য বিশেষ ওয়্যারহাউজ সুবিধা চালুর বিষয়টিও বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছে সিপিডি। তাদের মতে, এ ধরনের ব্যবস্থা থাকলে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা পোশাকে ব্যবহৃত তুলার ভিত্তিতে শুল্ক ছাড় বা মওকুফের বিষয়টি আলোচনায় আনা সহজ হবে।