বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ বা সহজে ব্যবসা সূচক এখন আর প্রাসঙ্গিক নয়। এই সূচক অনেক আগেই তৈরি হয়েছে এবং বর্তমান বাস্তবতায় তা অনুসরণ করা উচিত নয় বলে মত দেন তিনি।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আশিক চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্বের কোনও বাজারেই সমস্যা নেই এমনটা বলা যাবে না। প্রত্যেক দেশেরই কিছু না কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে এসব সমস্যা চিহ্নিত করে আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে আমরা তা সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
বিনিয়োগ সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বিএসইজেড), ইপিজেডসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল ঘুরে দেখেন। এ সময় তারা সরকারের প্রতি লালফিতার দৌরাত্ম্য কমানো এবং নীতিগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বিডা চেয়ারম্যান জানান, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা জানতে চেয়েছেন— বাংলাদেশে ব্যবসা করতে এলে সরকার কী ধরনের সুবিধা দেবে এবং কীভাবে প্রশাসনিক জটিলতা হ্রাস করা হবে।
আশিক চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, সরকার বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কারোপ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ট্যারিফের এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশের একার নয়, বরং এটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছি এবং তা প্রকাশ্যেও এনেছি।’
সোমবার সম্মেলনের প্রথম দিনে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কোরিয়ান রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (কেইপিজেড) পরিদর্শন করেন চীন, ভারত, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশের ৬০ জন বিনিয়োগকারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
এ সময় কোরিয়ার বিখ্যাত কোম্পানি ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং বলেন, ‘বাংলাদেশ এখনও লাভজনক বিনিয়োগের জন্য একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য। যদিও প্রশাসনিক জটিলতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ, তারপরও আমরা ধারাবাহিকভাবে এখানে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছি।’
বিনিয়োগকারীরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন— নীতির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ, শুল্ক ও কর-সংক্রান্ত সেবা যেন আরও সহজ ও নিরবচ্ছিন্ন করা হয়, যাতে তারা স্বস্তিতে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারেন।