পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সংবাদ নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি সংবাদমাধ্যম পর্যবেক্ষণসেবা বা ‘নিউজ মিডিয়া মনিটরিং সেবা’ চালুর পরিকল্পনা করছে। এ লক্ষ্যে সংস্থাটি উপযুক্ত সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের জন্য একটি দরপত্র আহ্বান করেছে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি বিএসইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি থার্ড পার্টি সেবা কেনার জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। সেবাটা হলো এ রকম যে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পুঁজিবাজারসংক্রান্ত যেসব নিউজ হয়, সেটার সামারি করে কমিশনে জমা দেবে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। মনিটরিং শব্দটা ভিন্ন অর্থ বোঝায়, সেটা কিন্তু নয়। এখন বিএসইসি থেকে নিউজ পেপার কাটিং করা হয়। কিন্তু অনেক সংবাদ অগোচরে থেকে যায়। সেটা যেন না হয়, তার জন্য থার্ড পার্টির কাছ থেকে এই সেবা নেওয়ার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।’
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সিকিউরিটিজ কমিশনের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনের (আইওএসসিও) ‘এ’ ক্যাটাগরির সদস্য হিসেবে বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষার্থে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন ও সামাজিকমাধ্যমের সংবাদ পর্যবেক্ষণ করবে।
কমিশন এমন একটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রস্তাব আহ্বান করেছে, যারা দেশের জাতীয় পর্যায়ের প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন ও সামাজিকমাধ্যম থেকে পুঁজিবাজারসংক্রান্ত সংবাদ সংগ্রহ ও সরবরাহ করতে পারবে।
তথ্যগুলো নির্ধারিত কি–ওয়ার্ড ব্যবহার করে ইমেইল ও একটি পোর্টাল ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হবে এবং প্রয়োজনে ভিডিও ক্লিপও অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।
সংবাদগুলো সাধারণ ও নেতিবাচক প্রতিবেদনে বিভক্ত থাকতে হবে, যেখানে নেতিবাচক প্রতিবেদনে আইন ও বিধিবিধান লঙ্ঘনের বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে। যেমন অর্থ পাচার প্রতিরোধ (এএমএল), সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ (সিএফটি), সিকিউরিটিজ আইন বা অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নীতিমালা লঙ্ঘনের ঘটনা ইত্যাদি।
বিএসইসি মনে করে, এই পর্যবেক্ষণসেবাটি ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা আরও জোরদার করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থার মান বজায় রাখা সম্ভব হবে।
বিএসইসি জানিয়েছে, প্রতিদিন গণমাধ্যমে পুঁজিবাজারসংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হয়, যা বিনিয়োগকারী ও সামগ্রিক বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে। বিভ্রান্তিকর বা ভুয়া সংবাদ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। একটি ‘সংবাদমাধ্যম পর্যবেক্ষণসেবা’ বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন শনাক্ত ও বিশ্লেষণ করতে এবং গণমাধ্যমে বাজারসংক্রান্ত গুজবের বিস্তার রোধ করতে সাহায্য করবে, যা তথ্যের প্রবাহকে আরও স্বচ্ছ ও নির্ভরযোগ্য করে তুলবে।
সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে চুক্তি সইয়ের তারিখ থেকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও বার্ষিক ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে হবে।