Homeঅর্থনীতিট্রাম্পের বর্ধিত শুল্কে বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা আরও ঘনীভূত, সোনার দামে নতুন রেকর্ড

ট্রাম্পের বর্ধিত শুল্কে বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কা আরও ঘনীভূত, সোনার দামে নতুন রেকর্ড


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্ধিত শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আর এই যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন। এ কারণে সোনার দাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। গতকাল বুধবার স্পট মার্কেট তথা তাৎক্ষণিক বাজারে সোনার দাম আউন্স প্রতি ৩ হাজার ৩৫৭ দশমিক ৪০ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ লাখ ৭ হাজার ৫৭৫ টাকায় উঠেছিল। যদিও পরে দাম কিছুটা কমে যায়। এ বছরের শুরু থেকে সোনার দাম প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে।

মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে সম্ভবত প্রবৃদ্ধি কম হবে, পণ্যের দাম বাড়বে এবং বেকারত্বের ঝুঁকি তৈরি হবে। এরপরই বাড়ে সোনার দাম। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে সোনাকে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে দেখেন।

গতকাল বুধবার শিকাগোর ইকোনমিক ক্লাবে ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ার জেরম পাওয়েল বলেন, সম্প্রতি ঘোষিত প্রত্যাশার চেয়ে বেশি শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কম হতে পারে এবং ভোক্তাদের জন্য দাম বাড়তে পারে। পাওয়েল এমন এক সময়ে এই বক্তব্য দেন যখন নতুন আমদানি শুল্ক কার্যকর হওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ব আর্থিক বাজারে অস্থিরতা চলছে।

এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান স্টিফেন ইন্নেস বলেছেন, সোনা এখন ‘পুরোপুরি জীবনরক্ষাকারী নৌকার মতো’ অবস্থায় আছে। এটি এখন ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ভিড় জমানো ব্যবসা।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাণিজ্য নীতির অপ্রত্যাশিত পরিবর্তনের কারণে ডলার দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং পোর্টফোলিও ম্যানেজাররা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত যেকোনো কিছুর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।’

বিশ্লেষকেরা এ বছরের সোনার দামের এই বৃদ্ধিকে চার দশকেরও বেশি আগেকার ইরানি বিপ্লবের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তখন ১৯৭৯ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৮০ সালের জানুয়ারির মধ্যে সোনার দাম প্রায় ১২০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। গত মাসে প্রথমবারের মতো সোনার দাম আউন্স প্রতি ৩ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় এমনটা হয়েছে।

পরামর্শক সংস্থা মনেক্স গ্রুপের জেসপার কল বলেছেন, বিনিয়োগকারীরা সোনাকে ‘মুদ্রাস্ফীতি এবং সরকারি অবিবেচনার বিরুদ্ধে একটি বিশ্বাসযোগ্য সুরক্ষা’ হিসেবে দেখছেন। তিনি আরও বলেন, ‘সবাই আসল সম্পদ খুঁজছেন। এটা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে যে টিম ট্রাম্পের দ্রুত পদক্ষেপ এবং সবকিছু ভেঙে ফেলা নীতি তৈরির পদ্ধতি বদলাবে না।’

ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত শুল্ক বিদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর ধার্য করা হয়। এটি মার্কিন বাজারে মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা বাড়িয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা সোনার মতো নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ঝুঁকছেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে ট্রাম্প এখন পর্যন্ত চীনের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। জবাবে চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। অন্যান্য অনেক দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে কিনা তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এই পদক্ষেপের ফলে উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবে, আমেরিকান শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় হবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত