পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আবারও অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে সার্ভিল্যান্স ও মনিটরিং বিভাগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আজ সোমবার রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে বিএসইসির কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে এই অভিযান শুরু হয়। দুজন সহকারী পরিচালকের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, দুদকের তদন্ত দল প্রথমে এসেই বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে বিএসইসির সার্ভিল্যান্স ও মনিটরিং বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে অভিযান পরিচালনা করেন।
এর আগে, গত ২ মার্চ বিএসইসিতে অভিযান পরিচালনা করে দুদক। অভিযানকালে পাওয়া অনিয়মগুলো শিগগিরই কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে বলেও জানায় দুদক।
অভিযানকালে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ২০১০ সাল পরবর্তী দুই কমিশনের মেয়াদের অনিয়ম ও দুর্নীতির অনেক প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে, বিভিন্ন কোম্পানির প্রসপেক্টাসে থাকা আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্যেও ম্যানিপুলেট করা হয়। আর্থিক অবস্থা দুর্বল থাকা কোম্পানিকে সবল দেখানো হয়। তারপর মার্কেটে ছাড়া হয় আইপিও। সেই কোম্পানি অব্যাহত প্রবৃদ্ধিও করেছে। তারপর একপর্যায়ে তাদের শেয়ারদর পড়তে শুরু করে। এতে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে বিভিন্ন সময় এসব কোম্পানির বিষয়ে সতর্ক করে সুপারিশ করা হলেও বিএসইসি তা আমলে নেয়নি।
দুদক জানিয়েছে, এসব অনুসন্ধানে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট জালিয়াতি ও বাণিজ্য, অধিক মূল্যে শেয়ার প্রাইজ নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ ও অল্প সময়ে শেয়ার বিক্রি, প্রাইজের দ্রুত অবনমনের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়টিও পরিলক্ষিত হয়েছে।
দুদক আরও জানিয়েছে, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দল আরও দেখতে পায় যে, দুর্বল কোম্পানিগুলোকে অবৈধভাবে অনুমোদন দেওয়ায় ক্যাপিটাল মার্কেটে প্রবেশের অল্পদিনেই তাদের লো পারফর্মিং কোম্পানি হিসেবে জেড ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়াও জালিয়াতির মাধ্যমে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের প্রস্তুতকৃত উইন্ডো ড্রেসড ব্যালান্সশিট ও ফ্যাব্রিকেটেড আর্নিং রিপোর্ট ও ইস্যু ম্যানেজারের তৈরিকৃত ওভারভ্যালুড কোম্পানি প্রোফাইলের পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়মের আশ্রয়ে বিএসইসি আইপিওর অনুমোদন দিয়েছে। প্রাপ্ত অনিয়মগুলোর বিষয়ে দুদক টিম প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।