Homeঅর্থনীতিএবার প্রবৃদ্ধি কমলেও আগামী অর্থবছরে বেড়ে ৬.৭ শতাংশে উঠতে পারে: আইএমএফ

এবার প্রবৃদ্ধি কমলেও আগামী অর্থবছরে বেড়ে ৬.৭ শতাংশে উঠতে পারে: আইএমএফ


বাংলাদেশের প্রকৃত সামগ্রিক দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধির হার ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আস। এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। মূলত গণবিক্ষোভ, বন্যা এবং কড়া নীতি অনুসরণের কারণে উৎপাদন কমে যাওয়ার ফলস্বরূপ এমনটা হবে। তবে আগামী অর্থ বছর তথা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নীতি শিথিল হওয়ায় এটি আবারও ৬ দশমিক ৭ শতাংশে উঠে যাবে।

গত ১৮ ডিসেম্বর আইএমএফ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি ১১ শতাংশের কাছাকাছি থাকতে পারে এবং পরে ২০২৬ সালে তা ৫ শতাংশে নেমে আসবে। মূলত কড়া মুদ্রা নীতি এবং সরবরাহ চাপ শিথিল হওয়ার কারণে এই উন্নতি হবে।

আইএমএফের এক্সটেনডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ), এক্সটেনডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাস্টেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ)—এর তৃতীয় পর্যালোচনার প্রেক্ষাপটে ঢাকা সফর করে যাওয়া আইএমএফ দলের তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এই দলের নেতৃত্ব দেন ক্রিস পাপাগিওরগিও।

আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তবে, এই পূর্বাভাসটি অত্যন্ত অনিশ্চিত এবং (দেশের অর্থনীতিতে) বিদ্যমান ঝুঁকিগুলোও নেতিবাচক দিকে।’ বাংলাদেশ অর্থনীতি চলমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সংগ্রাম করছে এবং নতুন করে বিদেশি অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার মুখোমুখি। এই অবস্থায় বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ৭৫০ মিলিয়ন ডলার বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছে। যাতে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায় এবং বাইরের আঘাতের বিপরীতে দেশের স্থিতিস্থাপকতা শক্তিশালী করা যায়।

আইএমএফ যদি নতুন করে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ প্রদান করে তাহলে ইসিএফ এবং ইএফএফ ব্যবস্থার অধীনে মোট আর্থিক সহায়তা প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারে ঠেকবে। পাশাপাশি আরএসএফ ব্যবস্থায় সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াবে ১৩০ কোটি ডলার।

এদিকে, আইএমএফের ঋণের তৃতীয় পর্যালোচনা সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ আগের ঋণের মধ্য থেকে ৬৪৫ মিলিয়ন ডলার পাবে। যার মধ্যে ৪২৬ মিলিয়ন ডলার ইসিএফ এবং ইএফএফ—এর অধীনে এবং বাকি ২১৯ মিলিয়ন ডলার আরএসএফ—এর অধীনে।

আইএমএফের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাপাগিওরগি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময়মতো উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। তবে, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্যভাবে ধীর হয়ে গেছে এবং মুদ্রাস্ফীতি উচ্চ রয়ে গেছে। বিশেষ করে, ব্যাংকিং খাত থেকে মূলধন বেরিয়ে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ সৃষ্টি করেছে। তদুপরি, কর রাজস্ব কমেছে, যখন ব্যয়ের চাপ বেড়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আর্থিক খাতের কিছু অংশে চাপ।’

পাপাগিওরগি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের কম কর-জিডিপি অনুপাত একটি জরুরি কর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে, যাতে একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং রাজস্ব স্থিতিশীলভাবে বাড়ানো যায়, যা ছাড় দেওয়া সমীকরণগুলো সহজ করা, যৌক্তিকতা বাড়ানো এবং কর নীতি ও প্রশাসনকে পৃথক করা নিয়ে কাজ করবে। এ ছাড়া, একটি ব্যাপক কৌশল প্রয়োজন যা ভর্তুকি ব্যয় হ্রাস এবং বিদ্যুৎ ও সার খাতের ঋণ সম্পর্কিত সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হবে।’

এদিকে, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশকে ১১৬ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা (ডলারপ্রতি ১১৬ টাকা ধরে)। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ব ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা, পানি ও স্যানিটেশন পরিষেবা এবং সবুজ ও জলবায়ু সহনশীল উন্নয়নে—এই তিন প্রকল্পে বাংলাদেশের জন্য এ ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক পরিষদ।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত