কুয়েতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪তম দিবস এবং জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। এসময় একটি জমকালো সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কুয়েতের ক্রাউন প্লাজা হোটেলে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে কুয়েতে রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক কোরের সদস্য, উচ্চপদস্থ কুয়েতি কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশ সামরিক কন্টিনজেন্টের সদস্য, স্থানীয় প্রেস ও মিডিয়ার প্রতিনিধি এবং কুয়েতে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সদস্যসহ ৪০০ জনেরও বেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুয়েত রাজ্যের আইন মন্ত্রী নাসের ইউসুফ মোহাম্মদ আল সুমাইত।
এসময় কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন ও দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
বাংলাদেশ ও কুয়েতের জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন তার স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ায় অতিথিদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি কুয়েতের আমির শেখ মিশাল আল আহমদ আল জাবের আল সাবাহ, কুয়েতের নেতৃত্ব এবং জনগণকে দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের ক্রমাগত সমর্থনের জন্যও কৃতজ্ঞতা জানান।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর কুয়েতই প্রথম উপসাগরীয় দেশ যা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৪ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ ও কুয়েত রাজনৈতিক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জনশক্তি, কৃষি, শিক্ষা এবং প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দৃঢ় সহযোগিতা উপভোগ করেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, কুয়েত রাজ্যের আমিরের গতিশীল নেতৃত্বে এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের দূরদর্শী নেতৃত্বে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অব্যাহতভাবে সমৃদ্ধ হবে এবং নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
রাষ্ট্রদূত আর্থসামাজিক অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য অর্জন উল্লেখ করে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য যাত্রার কথাও তুলে ধরেন। তিনি তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে জুলাই-আগস্ট ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের কথাও উল্লেখ করেন এবং একটি ন্যায়সংগত, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক সমাজের আকাঙ্ক্ষা সমুন্নত রাখতে এবং দেশে গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে এর ভূমিকার ওপর জোর দেন।
ঢাকায় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিনিয়োগের শীর্ষ সম্মেলনের উল্লেখ করে যেখানে ৫০টি দেশের ৪১৫ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছিলেন, রাষ্ট্রদূত কুয়েত এবং অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলিকে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার এবং পারস্পরিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধিতে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। তিনি বাংলাদেশের পর্যটন খাতের সম্ভাবনার ওপর জোর দেন, এটিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং উষ্ণ আতিথেয়তার দেশ হিসেবে চিত্রিত করেন।
তিনি সবাইকে বাংলাদেশ সফর করতে এবং এর মোহনীয়তা অনুভব করতে উৎসাহিত করেন। রাষ্ট্রদূত তার সমাপনী বক্তব্যে কুয়েতে প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের উন্নয়নে আন্তরিকভাবে অবদান রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।