২০২৪ সালকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক বছর হিসেবে অভিহিত করেছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসনবিষয়ক সংস্থা (আইওএম)। বছরটিতে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড প্রায় ৯ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী প্রাণ হারিয়েছেন। মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে এশিয়া।
শুক্রবার (২১ মার্চ) জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এ তথ্য জানিয়েছে।
আইওএম বলেছে, ২০২৪ সালে বিশ্বজুড়ে যাত্রাপথে কমপক্ষে ৮ হাজার ৯৩৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন।
২০১৪ সাল থেকে অভিবাসীদের মৃত্যুর হিসাব রাখতে শুরু করে সংস্থাটি। সেই হিসাবে ২০২৪ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক অভিবাসী মারা গেছেন। জাতিসংঘ মৃত্যুর এই সংখ্যাটিকে ‘অগ্রহণযোগ্য এবং প্রতিরোধযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছে।
২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে অন্তত ২০০ জন মানুষ বেশি প্রাণ হারিয়েছেন। ২০২০ সাল থেকে অভিবাসন রুটে মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
আইওএমের উপপরিচালক উগোচি ড্যানিয়েলস বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে অভিবাসী মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান ঘটনা একই সঙ্গে অগ্রহণযোগ্য, আবার প্রতিরোধযোগ্যও।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি সংখ্যার পেছনে একজন মানুষ থাকে, যার জন্য এই ক্ষতির মাত্রা ভয়াবহ।’
আইওএমের মিসিং মাইগ্রেন্ট প্রজেক্ট অনুসারে, শুধু এশিয়া মহাদেশেই কমপক্ষে দুই হাজার ৭৭৮ জন অভিবাসী মারা গেছেন। সংখ্যাটি ২০২৩ সালের চেয়ে ৬২৪ জন বেশি।
মৃতের হিসাবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভূমধ্যসাগর। দুই হাজার ৪৫২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে। অভিবাসন রুটে মৃত্যুর তৃতীয় সর্বোচ্চসংখ্যা আফ্রিকায় রেকর্ড করা হয়েছে। যেখানে দুই হাজার ২৪২ জন মারা গেছেন।
আমেরিকা মহাদেশের ক্ষেত্রে এখনো চূড়ান্ত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী কমপক্ষে এক হাজার ২৩৩ জন অভিবাসী মারা গেছেন।
অভিবাসীদের মৃত্যু এবং নিখোঁজের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইওএম জানিয়েছে, সরকারি সূত্রের অভাবে অনেক তথ্য অপ্রমাণিত রয়ে যাচ্ছে।
২০১৪ সাল থেকে অভিবাসী মৃত্যুর হিসাব রাখছে আইওএম। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৭৪ হাজারের বেশি অভিবাসী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন।
পাঁচ বছর ধরে বিশ্বজুড়ে অভিবাসী মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। আইওএম জানিয়েছে, ২০২২ সাল থেকে অভিবাসী মৃত্যুর অন্তত ১০ শতাংশ ঘটছে সহিংসতার কারণে। আইওএম বলছে, অভিবাসী হলেন সেই মানুষ, যিনি বা যারা স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় নিজ বসতভিটা ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। তাদের অনেকেই আবার অন্য কোনো দেশে আশ্রয় চান, কারণ তারা যুদ্ধ বা সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসেন।
এ ইউ/