লেবানন থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত ৩০ দিন সময় চেয়েছে ইসরাইল। তবে চুক্তি অনুযায়ী ইসরাইলকে দক্ষিণ লেবানন থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে হিজবুল্লাহ।
নভেম্বরে, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরাইল এবং ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়, যার মাধ্যমে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষের অবসান হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, ইসরাইলি বাহিনী লেবানন থেকে এবং হিজবুল্লাহ বাহিনী দক্ষিণ লেবানন থেকে ৬০ দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করার কথা ছিল, যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী সোমবার অর্থ্যাৎ ২৬ জানুয়ারি।
ইসরাইল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার বৃহস্পতিবার বলেন, লেবানন সেনাবাহিনী এবং ইউনিফিল (জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী) ইতোমধ্যেই হিজবুল্লাহ বাহিনীর স্থান গ্রহণ করেছে, যা চুক্তিতে নির্ধারিত ছিল। তবে, এই পদক্ষেপগুলো যথেষ্ট দ্রুত হয়নি এবং আরও কাজ বাকি রয়েছে।
মেনসার আরো বলেন, ইসরাইল চায় চুক্তি অব্যাহত থাকুক, তবে তিনি সরাসরি উত্তর দেননি যে, ইসরাইল কি চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কোনও অনুরোধ করেছে বা ৬০ দিনের পর ইসরাইলি বাহিনী লেবাননে অবস্থান করবে কিনা।
আল জাজিরার প্রতিবেদক জেনা খোদর বৈরুত থেকে জানান, ইসরাইলের মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ইসরাইল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করছে, যাতে চুক্তির মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ানো যায়।
খোদর আরও উল্লেখ করেন, হিজবুল্লাহ হুমকি দিয়েছে, যদি ইসরাইলি সেনারা লেবাননে অবস্থান করে, তবে তারা তাকে দখলদারিত্ব হিসেবে বিবেচনা করবে এবং প্রতিরোধ শুরু করবে।
হিজবুল্লাহ বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, চুক্তির ৬০ দিনের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ইসরাইল অবশ্যই লেবানন থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করতে হবে, এবং কোনো ধরনের চুক্তি লঙ্ঘন তারা মেনে নেবে না। তারা সতর্ক করেছে, ইসরাইল যদি প্রত্যাহার না করে, তবে লেবাননের জনগণ ‘ইসরাইলি দখলদারিত্ব’ প্রতিরোধ করার জন্য নতুনভাবে ব্যবস্থা নেবে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের সঙ্গে বৈঠকে এর আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরাইলকে অবশ্যই লেবানন থেকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে।
এদিকে ইসরাইলি আর্মি রেডিও বৃহস্পতিকার সকালে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন অতিরিক্ত ৩০ দিনের সময় দেওয়ার বিষয়ে আগের প্রশাসনের মতো আগ্রহী নয়। ট্রাম্প প্রশাসন চায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সম্পূর্ণ প্রত্যাহার সম্পন্ন হোক।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরাইলের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত রেডিওকে জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন জেরুজালেম ও ওয়াশিংটন এই বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছাবে এবং শেষ পর্যন্ত ইসরাইল সময় বাড়ানোর অনুমতি পাবে।
এ ইউ/