পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় লুমা রাখাইন নামে এক নারীর সাড়ে ৭ একর জমির প্রায় ২৫০ মন ধান লুট করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মহিপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আলী আক্কাসের বিরুদ্ধে। বিষয়টি বিএনপি নেতাদের অবগত করার পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নারী। বুধবার কুয়াকাটা প্রেসক্লাব হল রুমে সংবাদ সম্মেলন করেন লুমা রাখাইন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার বাবার কাছ থেকে পাওয়া এবং আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ক্রয় করা ৭ দশমিক ১৮ একর সম্পত্তি আমি আজীবন ভোগদখল করে আসছি। হঠাৎ ২০২২ সালে যুবদল নেতা কুপরামর্শ দিয়ে আমার ভাইয়ের মাধ্যমে সম্পত্তি দখলের পায়তারা করে আমার নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ৫ আগস্টের পরে তারা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেলে আমার জমিতে আমার বর্গাচাষি ধান কাটা শুরু করলে ওই বিএনপির নেতা ৩০-৩৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল নিয়ে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদেরকে ধাওয়া দিয়ে সব ধান লুট করে নিয়ে যায়। তবে এ বিষয়টি অস্বীকার করে যুবদল নেতা বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে বিএনপির লোকজন ষড়যন্ত্র করছে।
লিখিত বক্তব্য লুমা রাখাইন আরও বলেন, বাবা জীবিত থাকাকালে পুরো সম্পত্তি স্থানীয় মংফরম তালুকদারের কাছে মৌখিকভাবে বিক্রি করে তবে কোনো প্রকার রেজিস্ট্রি দলিল হয়নি। তার আগে আমার বাবা মৃত্যুবরণ করে। এমতাবস্থায় আমি মংচিং কবিরাজের মেয়ে লুমা রাখাইনের আর কোনো সম্পত্তি না থাকায় বাবার নেওয়া পুরো টাকা মংফরম তালুকদারকে ফেরত দিয়ে পুরো সম্পত্তি ফেরত আনি। এই বিষয়টি কলাপাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে এভিডেভিট করে নিয়ে আসি ২০০৪ সালে। পরবর্তীতে এই সম্পত্তির সিএস আমার নামে এবং খাজনা দিয়ে আসছি নিয়মিত।
তিনি আরও বলেন, আমার বাবার আরও এক ছেলে থাকায় আমার আপন ভাই এমংচি ওরফে ইয়াইমংচিং প্রায় ৪৫ বছর বারমা থাকার পরে ২০১০ সালে দেশে ফিরে আসলে তার ওয়ারিশসূত্রে পাওয়া সম্পত্তি দাবি করলে আমি তার পাওনা ২ দশমিক ৪০ একর সম্পত্তি ফেরত দেই, পরে আবার আমার ভাই তার সেই ২ দশমিক ৪০ একর সম্পত্তি আমার কাছে বিক্রি করে।
এতদিন আমি সেই পুরো সম্পত্তি ভোগদখল করলে বিএনপি নেতা আক্কাস আলীর ছেলে রাব্বি হাং, ফিরোজ হাং, জাফর হাং, মো. কাদের, মো. জলিল মোল্লাসহ অনেকে এই লুটে সহযোগিতা করেন। লুট করে নেওয়ার আগে আরও একবার চেষ্টা করলে পুরো বিষয়টা আমি কুয়াকাটা পৌর বিএনপি এবং লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র নেতাদের কাজে জানালে তারা কাগজপত্র দেখে আক্কাসকে জমির কাছে যেতে নিষেধ করে। এরপরও তিনি আমার ধান লুট করে নেয়। তাকে যে নিষেধ করা হয়েছে তার সাক্ষী জামায়াতের কুয়াকাটা পৌর আমির মাওলানা মাঈনুল ইসলাম মন্নান, মহিউদ্দিন মুসুল্লী সুলতান, আলাউদ্দিন মুসুল্লীসহ বেশ কয়েকজন বিএনপির নেতা।
তবে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে বিএনপি নেতা আলী আক্কাস বলেন, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার বিরুদ্ধে বিএনপির লোকজন ষড়যন্ত্র করছে। আমরা কখনো এই সম্পত্তি ভোগদখল করিনি। আর ধান লুটের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এ বিষয়ে মহিপুর থানা যুবদলের আহ্বায়ক মো. সিদ্দিক মোল্লা বলেন, আমি বিষয়টি এখনো অজানা। এলাকায় ছিলাম না আসতেছি, তবে এই অভিযোগ যদি সত্যি হয় তা হলে সাংগঠনিকভাবে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিব। সন্ত্রাস বা লুটকারীদের জায়গা দলে নেই।
এ ইউ/