রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ভুয়া ভিসা ও জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ভুয়া বিএমইটি স্মার্টকার্ড তৈরি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মো. ওমর ফারুক (৪৬), শিউলি আক্তার (৩২) ও মো. শাকিল হোসেন (২৩)।
রবিবার মিরপুর এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করেছে ডিবি-মিরপুর বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ, গাড়ি চুরি প্রতিরোধ ও উদ্ধার টিম।
মঙ্গলবার ডিএমপির উপ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রবিবার ডিবি-মিরপুর বিভাগের টিম জানতে পারে লাইসেন্সবিহীন কিছু এজেন্সি ভুয়া বিএমইটি স্মার্টকার্ড ও জাল ভিসা তৈরি করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। ঘটনার সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মিরপুর মডেল থানাধীন মিরপুর কমার্স কলেজ সংলগ্ন ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা থেকে শিউলি আক্তারকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুরান পল্টনের সখ সেন্টারের ৮ম তলায় অবস্থিত মা-মনি ওভারসিজ লিমিটেডের অফিসে অভিযান চালিয়ে মো. ওমর ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়। ওমর ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অবৈধভাবে বিএমইটি স্মার্টকার্ড ও জাল রাশিয়ান ভিসা তৈরি করে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির কাছে সরবরাহ করে আসছিল মর্মে জানায়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শাকিল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেখানো মতে তার অফিসে তল্লাশি চালিয়ে একটি কম্পিউটার, ২৩টি বিএমইটি স্মার্টকার্ডের হার্ডকপি, দুটি মোবাইল ফোন ও ভুয়া ওয়েবসাইট ব্যবহার করে অবৈধভাবে বিএমইটি স্মার্টকার্ড ও জাল রাশিয়ান ভিসা তৈরিতে ব্যবহুত পিসির স্কিন রেকর্ডের একটি সিডি জব্দ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল জানায়, তার সবুজবাগ থানাস্থ মানিকনগরের ভাড়া বাসায় ভুয়া ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট রয়েছে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মানিকনগরের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১৪টি ভুয়া ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারের শিউলি আক্তারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিজয়নগর এলাকায় তার অফিসে অভিযান চালিয়ে আরও কয়েকটি ভুয়া ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট এবং দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ ভিসা প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া ভিসা ও বিএমইটি কার্ড তৈরি করে লোকজনের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। তারা ১০-১২ জন এজেন্টের মাধ্যমে ভুয়া বিএমইটি স্মার্টকার্ড ও ভুয়া রাশিয়ান ভিসা দেখিয়ে প্রায় ২০০-২৫০ জন লোকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ইউ/