প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে পরিবেশ বান্ধব কাগজের কলম তৈরি করা হয়েছে। ব্যবহার শেষে কলম মাটিতে ফেললেই জন্ম হবে ফলদ গাছের চারা। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পাঁচ টাকায় হাজার টাকা আয়ের উদ্যোগ। এমন উদ্যোক্তা আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোঃ আমিরুল ইসলাম। তার এ উদ্যোগ এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামের মোঃ মনিরুল ইসলামের ছেলে আমিরুল ইসলাম আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী। ছোট বেলা থেকেই নতুন কিছু সৃষ্টির উদ্যোগ তার। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে পরিবেশ বান্ধব কলম তৈরির উদ্যোগ নেন আমিরুল। দুই মাস চেষ্টার ফলে গত নভেম্বর মাসে সফল হন তিনি। বিভিন্ন রংঙের কাগজের মধ্যে কালির শীষ পেঁচিয়ে আটা লাগিয়ে ভালোভাবে মুড়িয়ে দেয়া হয়। ওই কাগজের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ গাছের চারা ভরে দেয়। ওই কলম রোধে শুকিয়ে শক্ত করা হয়। এভাবে তৈরি হয় পরিবেশ বান্ধব কাগজের কলম। এ কলম ব্যবহার শেষে মাটিতে ফেলে দিলেই ফলদ গাছের চারা জন্ম হবে।
উদ্যোক্তা আমিরুল ইসলামের উদ্যোগ পাঁচ-দশ টাকা ব্যয়ে হাজার টাকা আয়ের পথ তৈরি করা এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। বাজারে থাকা প্লাস্টিকের কলম পরিবেশ দূষণ ছাড়া আর কিছুই হয়না। আর এ কলমের কালি ফুরিয়ে গেলে মাটিতে ফেলে রাখলেই গাছের চারা জন্ম হবে। ওই গাছ থেকে আয়ের পথও সুগম হবে আবার পরিবেশ রক্ষা পাবে। প্রকার ভেদে এ কলম পাঁচ টাকা ও দশ টাকায় বিক্রি হয়। আমতলী উপজেলার প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ কলম ব্যবহারের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমিরুলের এমন উদ্যোগ ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সকলেই তার এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
উদ্যোক্তা মোঃ আমিরুল ইসলাম বলেন, দুই মাস চেষ্টার পরে প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে কাগজের তৈরি পরিবেশ বান্ধব কলম তৈরি করেছি। এতে একদিকে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমবে অন্য দিকে কলমটি ব্যবহার শেষে মাটিতে ফেলে রাখলেই ফলদ গাছের চারা জন্মাবে। প্লাস্টিকের তৈরি কলম শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট করছে। এ কলম ব্যবহার করলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হবে না। উলটো পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষার পথ সুগম হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমার লক্ষ্য হলো পাঁচ টাকা ব্যয়ে হাজার টাকার আয়ের পথ সৃষ্টি করা। মানুষ গাছ রোপনে আগ্রহী না। আমার এ উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে অনায়াসেই গাছ মাটিতে জন্ম হবে। কারণ যেখানে এ কলম ফেলা হবে সেখানেই ফলদ গাছের চারা জন্ম হবে। তিনি আরো বলেন, সরকারী আর্থিক সহায়তা পেলে পরিবেশ বান্ধব এ কলম দেশের সর্বত্র বাজারজাত করা যাবে।
আমিরুল ইসলামের বাবা মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমিরুল লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোট বেলা থেকেই পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে। তারই সফলতা পরিবেশ বান্ধব কাগজের কলম তৈরি।
আমতলী এমইউ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএ হান্নান বলেন, আমিরুল ইসলাম প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে পরিবেশ বান্ধব কলম তৈরি করেছেন। এতে এক দিকে পরিবেশ সুরক্ষিত হবে অন্যদিকে আর্থিক সাশ্রয় হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আমিরুলের এমন উদ্যোগকে প্রসারিত করতে সকল ধরনের সহায়তা করা হবে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ।
এস এইচ/