অস্ট্রেলিয়া বিএনপির উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা দিবস, পবিত্র রমজান উপলক্ষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল এবং বাৎসরিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পবিত্র কোরআন তেলোয়াতের মাধ্যমে সভা শুরু করেন ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মো. ইলিয়াস।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের সিনেটর ও সাবেক এমপি ডেভিড শোব্রিজ বলেন, আমি এখনো স্মরণ করি, কীভাবে তরুণ ছাত্র-জনতা স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন ইতিহাসে অনন্য। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখছি, সে গণতন্ত্র আজ সংকটে। নির্বাচনের কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি নেই, যা উদ্বেগজনক। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে নির্বাচনের টাইম ফ্রেম ঘোষণা করা জরুরি। অস্ট্রেলিয়া চায়, বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ নির্বাচন হোক।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস পার্লামেন্টে ‘অস্ট্রেলিয়ান গ্রিনস’ দলের এমপি আবিগেইল বয়েড এমপি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমরা অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্ট থেকে ভয়েস রেইজ করব। গণতান্ত্রিক দেশের জন্য অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তিনি শুধু স্বাধীনতার ঘোষকই ছিলেন না, বরং যুদ্ধক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিদায় করলেও, এখনো নির্বাচনের জন্য নানা টালবাহানা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফেরাতে নির্বাচনের বিকল্প নেই।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল হক বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধা নন, তিনি ছিলেন আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার। গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে তার দেখানো পথ অনুসরণ করাই আমাদের কর্তব্য।
অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং সিপাহি-জনতার বিপ্লবের ফসল জিয়াউর রহমান। তিনি কেবল বিএনপির নন, সব বাংলাদেশির হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা ও দেশপ্রেম আমাদের অনুপ্রেরণা।
সভাপতির বক্তব্যে অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি এএফএম তাওহিদুল ইসলাম (ভার্চুয়ালি) বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম ছিলেন। তিনি আরাফার ময়দানে নিম গাছ রোপণ করেছিলেন, যা আজও হাজিদের ছায়া দেয়। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি এবং বাংলাদেশের জন্য আল্লাহর রহমত প্রার্থনা করি।
সিডনির লাকেম্বা লাইব্রেরি হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক (যুগ্ম সম্পাদক পদমর্যাদা) মোহাম্মদ ফেরদাউস অমি, অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সহসভাপতি ফয়জুর চৌধুরী, সেলিম লকিয়ত, মোবারক হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস কাঞ্চন শাহিন, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত সবুজ, কামরুল ইসলাম শামীম, সাদা সামাদ ও মো. কামরুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক সফিঊল আলম সফিক, কোষাধ্যক্ষ কে এম মনজুরুল হক আলমগীর, স্বেচ্ছাসেবক দল অস্ট্রেলিয়ার আহ্বায়ক মশিউর রহমান তুহিন ও সদস্য সচিব জাহিদুর রহমান, যুবদল অস্ট্রেলিয়ার আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য সচিব ফারুক হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন নিউ সাউথ ওয়েলসের এমপি, স্থানীয় সিনেটর, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ প্রায় ৩ শতাধিক প্রবাসী, বাংলাদেশি প্রবাসী।
অনুষ্ঠানে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্থতার জন্য মোনাজাত করা হয়।