Homeপ্রবাসের খবরবাংলাদেশি গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা বেকায়দায়

বাংলাদেশি গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা বেকায়দায়


ইউরোপ দেশ গ্রিসে ব্যাপক কর্মী সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রিক শ্রমবাজারে শ্রমঘাতি মেটাতে মোট তিন লাখ বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা। তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে নিয়োগকর্তারা বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ দিতে বেগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিয়োগকারী সংস্থাগুলো।

শুধু গ্রিক মালিকই নয় কর্মীর অভাবে বেকায়দায় পড়েছেন বাংলাদেশি মালিকানাধীন তৈরি পোশাক কারখানার মালিকরাও। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার জন্য ঢাকা-এথেন্স এর চুক্তি হলেও লক্ষণীয় কোনো অগ্রগতি নেই।

বর্তমানে গ্রিসের পোশাক কারখানা শিল্পে একচেটিয়া বাজার ধরে রেখেছেন বাংলাদেশিরা। গার্মেন্ট খাতে ব্যাপক সুনামও রয়েছে বাংলাদেশিদের। ফলে অনেক উদ্যোক্তাই এখন ঝুঁকছেন গার্মেন্ট ব্যবসায়।

একটা সময় স্থানীয় ও আরবদের দখলে ছিল তৈরি পোশাক খাত। বাংলাদেশিসহ এশিয়ানরা কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন তাদের কারখানায়। নানা হয়রানির শিকারও হতেন। এরপর দিন বদলাতে শুরু করে। বাংলাদেশিরা ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন পোশাক তৈরির কারখানা। সফলতা পাওয়ায় দিন দিন বাড়তে থাকে এর সংখ্যা। বর্তমানে এথেন্সে রয়েছে বাংলাদেশিদের প্রায় ৪ শতাধিক তৈরি পোশাক কারখানা। এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন ১০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি।

গ্রিসের বাংলাদেশিদের কারখানাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, স্বদেশি মালিকদের অধীনে কাজ খুশি কর্মীরাও। বর্তমানে গ্রিসের বাংলাদেশি পোশাক কারখানাগুলোতে ১০ থেকে ১২ হাজার কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্ট খাতে কর্মী নেওয়ার সুযোগ মিললে গ্রিসে ব্যবসার পরিধি আরও বাড়বে বলেও মনে করছেন গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতারা।

কর্মী সংকটে গ্রিস, বাংলাদেশি গার্মেন্ট ব্যবসায়ীরা বেকায়দায়

বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ইন গ্রিসের সাধারণ সম্পাদক সফল গার্মেন্ট ব্যবসায়ী এইচ এম জাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশি মালিকদের ৪শতাধিক গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে প্রায় ১০ হাজারের মতো বাংলাদেশি ভাইদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। আমাদের ফ্যাক্টরিতে শুধু বাংলাদেশিই নয়, গ্রিক, আলবেনিয়া, পাকিস্তানিসহ বিভিন্ন দেশের লোকজনও কাজ করে। গার্মেন্ট খাতে বাংলাদেশিদের ৯০ শতাংশ ব্যবসায়ীরাই এখন ভালো অবস্থানে রয়েছেন।

এইচ এম জাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘গার্মেন্ট খাতে প্রচুর কর্মী সংকট রয়েছে। বাংলাদেশ সরাসরি এ খাতে কর্মী আসার সুযোগ হলে গ্রিসে আমাদের গার্মেন্ট ব্যবসা আরও চাঙা হবে।’

এছাড়াও কর্মী সংকটে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী গ্রিসের কৃষিখাত। খামার শ্রমিকদের অভাব দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। গ্রিসে আন্তর্জাতিক শ্রমিকের চাহিদা ও জোগান নিয়ে কাজ করা প্রথম অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ওয়ার্কগ্রিস ডটআইও-এর সিইও বেঙালিস কানেলোপৌলস গ্রিক গণমাধ্যমে বলেন, প্রায় দুই হাজার ছোট ও বৃহৎ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান গ্রিসে বিদেশি কর্মী নিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে।

ওয়ার্কগ্রিস ডটআইও প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এরই মধ্যে বাংলাদেশ, মিশর, জর্জিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মলডোভা, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিপাইন্স এবং ভিয়েতনামসহ ১১টি দেশের ৩৫ হাজারেরও বেশি সম্ভাব্য অভিবাসী কর্মী গ্রিসে আসতে আগ্রহ দেখিয়ে নিবন্ধন করেছেন।

এদিকে কর্মী পাঠাতে ২০২২ সালে গ্রিসের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়। সে অনুযায়ী, বছরে চার হাজার কর্মী নেওয়ার কথা। কৃষি শ্রমিক হিসেবে দেওয়া হবে পাঁচ বছরের ওয়ার্ক পারমিট। কিন্তু জনশক্তি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রিসে কর্মী পাঠানো নিয়ে সরকারের স্পষ্ট দিক নির্দেশনা নেই। এছাড়া ভিসা জটিলতাও রয়েছে।

অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে গ্রিসে দূতাবাস না থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস চালু হলে চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর দেশটিতে চার হাজার কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে এবং শ্রম বাজার বাংলাদেশিদের দখলে থাকবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনা বলেন, ‘অনেক বাংলাদেশির ভিসার আবেদন দিল্লিতে গ্রিক দূতাবাসে প্রক্রিয়াধীন। আমরা একাধিকবার গ্রিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি, তারা আশ্বাস দিয়েছে খুব শিগগিরই এর সমাধান হবে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত