Homeপ্রবাসের খবরদশ মাসে মানুষের হাতে নগদ অর্থ বেড়েছে সাড়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকা

দশ মাসে মানুষের হাতে নগদ অর্থ বেড়েছে সাড়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকা


ব্যাংকগুলো উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করার পরও প্রতি মাসেই বাড়ছে মানুষের হাতে নগদ টাকা তথা ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ। সর্বশেষ চলতি বছরের আগস্ট মাসেই ব্যাংকের বাইরে থাকা মানুষের হাতে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৮০৪ কোটি টাকা। আর গত দশ মাসে (নভেম্বর-আগস্ট) মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৪৬ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

 

মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পর যা আর ব্যাংকে ফেরত আসে না, তা-ই ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকা হিসেবে পরিচিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাস শেষে মানুষের হাতে নগদ বা ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৩০ কোটি ৪ লাখ টাকা। আর পরের মাস আগস্ট শেষে মানুষের হাতে নগদ টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৪৩৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে ৮০৪ কোটি ৯ টাকা।

তথ্য মতে, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ধারাবাহিক কমছিল ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ। কিন্তু নভেম্বর থেকে আবার বাড়তে শুরু করেছে। যেটা চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের অক্টোবরে ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা।

পরের মাস নভেম্বরে সেটা বেড়ে দাড়ায় ২ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা, ডিসেম্বরে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬০ কোটি, জানুয়ারিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার ২৯৫ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৭৪ কোটি, মার্চে ২ লাখ ৬১ হাজার ১৯৫ কোটি, এপ্রিলে বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৮ কোটি, মে মাসে ২ লাখ ৭০ হাজার ৬৫৮ কোটি, জুনে ২ লাখ ৯০ হাজার ৪৩৬ কোটি, জুলাইয়ে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৩০ কোটি ও আগস্টে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯২ হাজার ৪৩৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ দশ মাসে ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে নগদ টাকা বেড়েছে ৪৬ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের খরচ বেশি হয়। এজন্য বাংক থেকে টাকা তুলে হাতে রাখে। তারপর ব্যাংক খাতের সামগ্রিক পরিস্থিতির কারণে কিছু ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থায়ও চির ধরেছে।

ওই সব ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নেন আমানতকারীরা। ফলে মানুষের হাতে নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়।

এদিকে, গত জুলাই মাসে মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ বাড়লেও জুনের তুলনায় কমেছে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে ব্যাংক খাতে ছাপানো টাকার স্থিতি (রিজার্ভ মানি) ছিল ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। জুনে রিজার্ভ মানির পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ৪ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। আর পরের মাস জুলাই শেষে রিজার্ভ মানির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। আর পরের মাস আগস্টে কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯৬ কোটি ৬ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে রিজার্ভ মানির পরিমাণ কমেছে ৩ হাজার ৫২০ কোটি ৫ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘মূলত দুইটি কারণে মানুষের হাতে নগদ টাকা বাড়ছে। প্রথমত, কিছু দিন ধরে কয়েকটি ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগতেছে। গ্রাহকদের আমানত ঠিকমতো ফেরত দিতে পারছে না। এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাংকের প্রতি একটা আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে হাতেই রেখে দিচ্ছে। দ্বিতীয়ত, দ্রব্যমূল্যও এখন অনেক বেড়েছে। সেই অনুযায়ী মানুষের আয় বাড়েনি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে মানুষকে আগের চেয়ে বেশি খরচ করতে হয়। তাই প্রয়োজনের চেয়েও মানুষ এখন হাতে টাকা বেশি রাখছে।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত