Homeপ্রবাসের খবরদক্ষিণ কোরিয়ায় যে কারণে চাকরি হারায় বাংলাদেশিরা

দক্ষিণ কোরিয়ায় যে কারণে চাকরি হারায় বাংলাদেশিরা


দক্ষিণ কোরিয়ায় বছর দশেক আগেও একটা কথা প্রচলিত ছিল; বাঙালিরা এখানে রাতে চাকরি ছাড়লে সকালে নতুন চাকরিতে যোগ দিতে পারেন। কোরিয়ায় ঠিক এতটাই চাহিদা ছিল বাংলাদেশি কর্মীদের। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই চাহিদার পরিবর্তন হয়েছে নানা কারণে।

মূলত ভাষাগত সমস্যা, কোরিয়ান খাবারে অভ্যস্ত না হওয়া, নিজেদের মধ্যে রেষারেষি এবং ক্ষেত্র বিশেষে অতি উচ্চাভিলাষী মনোভাব কিংবা বেশি বেতনের প্রত্যাশার কারণেই বাংলাদেশিদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার চাকরির বাজার দিন দিন সীমিত হয়ে আসছে।

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ কমে যাওয়ার কারণে এমনিতেই কর্মসংস্থানের স্বল্পতা তৈরি হচ্ছিল বেশ লম্বা সময় ধরেই। তার সাথে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। ডলারের পরিবর্তে দক্ষিণ কোরিয়ান উওনের মান মাত্রাতিরিক্ত নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শিল্প-কারখানার মালিকসহ দেশের আপামর জনসাধারণ। তার সঙ্গে শুরু হয়ে গেছে প্রচন্ড শীত আর তুষারপাত। অনেক ব্যস্ত কোম্পানিগুলোতেও এই সময়ে কাজের চাপ কম থাকে যার ফলে অনেক কোম্পানিই তাদের কর্মীদের ছাঁটাই করে থাকে।

একজন বিদেশি কর্মী চাকরি হারানোর সঙ্গে সঙ্গে এখানে তার মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও হারিয়ে ফেলেন কারণ প্রায় সব কোম্পানিতেই কর্মীর থাকার ব্যবস্থা মালিকপক্ষ করে থাকেন। যদিও এখন অনেক মসজিদ বা শেল্টারে চাকরি হারানো লোকজন থাকতে পারেন কিন্তু তাদের নতুন চাকরির ব্যাপারে তেমন কোনো সহযোগিতা করতে পারেন না কেউই।

এদিকে চাকরি হারানোর পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চাকরি জোগাড় করতে না পারলে কর্মীকে দেশে ফেরত আসতে হয় অথবা তিনি বৈধতা হারিয়ে ফেলেন।

এখানে চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম-কানুন মানতে হয় যেমন-কোনো মালিক চাইলেই তার ইচ্ছেমতো কাউকে এখানে নিয়োগ দিতে পারেন না আবার কোনো কর্মী চাইলেই নিজের ইচ্ছায় যে কোনো কোম্পানিতে গিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন না। এখানে নিয়োগ এবং কাজে যোগ দেওয়ার মধ্যবর্তী কাজটা করতে হয় জব সেন্টার বা নোদুংবু’র মাধ্যমে।

কর্মী প্রয়োজন হলে মালিক জব সেন্টারে আবেদন করবেন এবং জব সেন্টারে রক্ষিত চাকরি প্রত্যাশিদের সেটা অবগত করবেন।এরপর কর্মী সেই কোম্পানিতে গিয়ে যদি কাজ পছন্দ হয় এবং মালিক তাকে যোগ্য মনে করেন সেই কাজের জন্য তখন সেখানে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

কোরিয়ায় বিভিন্ন কারণে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় চাকরি হারানোর মানুষের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন এলাকাতে বাংলাদেশিদের জন্য মালিকদের তেমন কোনো আগ্রহ না থাকায় চাকরিহীন বাঙালিদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করছে।

বর্তমান এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ ব্যক্তিপর্যায়ে যারা দীর্ঘদিন ধরে কোরিয়ায় বসবাস করছেন তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরি এবং সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত কর্মীদেরও বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।





Source link

এই বিষয়ের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

এই বিষয়ে সর্বাধিক পঠিত