সাবেক ডিবি প্রধান হারুনকে নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন ডা. সাবরিনা হুসেন মিষ্টি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে বলে দাবি বন্দিনী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী এই পরিচালকের।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নে বন্দিনী ফাউন্ডেশনের আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডা. সাবরিনা হুসেন মিষ্টি। এ সময় তিনি সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন এবং তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর গুরুতর দাবি করেন।
ডা. সাবরিনা জানান, ২০২০ সালে তাকে করোনা সনদ জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে করা এই মামলা ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না। সাবরিনা বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকারির নানা ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠছিল, তখন জনগণের নজর অন্যদিকে সরাতে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়।
ডা. সাবরিনা বলেন, আমার মামলার সময়ে সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ তেজগাঁও জোনের ডিসি ছিলেন। আমাকেও তেজগাঁও থানার একটি মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়। পরে তিনি আমাকে আনঅফিসিয়ালি ফোন করে ব্যক্তিগতভাবে সেখানে যেতে বলেন। পরে একাধিকবার ফোন করে আমাকে যেতে বলেন। তবে ওনার কি উদ্দেশ্য ছিল তা জানা নেই। পরে আমাকে যখন তেজগাঁও থানায় ডেকে নেওয়া হলো সেবার তার সঙ্গে দেখা হলে তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন- কোন মেডিকেল কলেজ ও কততম বিসিএস? এই দুটো প্রশ্ন করে তিনি আমাকে গ্রেপ্তার করলেন। কিন্তু গণমাধ্যমে নানা কিছু বলে নাটক সাজিয়ে তিনি আমাকে গ্রেপ্তার দেখান।
ডা. সাবরিনা আরও বলেন, গণমাধ্যমে নানা নাটক সাজিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। হারুন সাহেব নাটক সাজাতে পছন্দ করতেন এবং এই মামলার ক্ষেত্রেও তার সম্পূর্ণ পরিকল্পনা ছিল। এটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি মামলার অংশ।
ডা. সাবরিনা আরো অভিযোগ করেন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন নিজে নাটক সাজানোর ব্যাপারে অত্যন্ত পটু ছিলেন এবং তারই নির্দেশে পুরো মামলার কুশলী নাটক সাজানো হয়েছিল। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে যা ঘটেছিল, সেটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চক্রান্তের অংশ। হারুন সাহেব এমনই একজন ব্যক্তি, যিনি রাজনৈতিক কারণে নানা ধরনের নাটক সাজাতে ভালোবাসেন।
২০২০ সালের ২৩ জুন, করোনা ভুয়া সনদ প্রদান, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে ডা. সাবরিনা হুসেন মিষ্টি, তার স্বামী আরিফুল ইসলামসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলায় সাবরিনা এবং তার স্বামী দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। তবে গত বছরের জুন মাসে তারা জামিনে মুক্তি পান। সাবরিনার জীবনের এই চরম অভিজ্ঞতা নিয়ে ২০২৪ সালের একুশে বই মেলায় তার ‘বন্দিনী’ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়, যা ব্যাপক আলোচনায় আসে।
এস এইচ/